এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকবার্তা জ্ঞাপন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন,
'পশ্চিমবঙ্গ সরকার
তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ
নবান্ন
৩২৫, শরৎ চ্যাটার্জি রোড
হাওড়া- ৭১১১০২
স্মারক সংখ্যা: ১৬২/আইসিএ/এনবি
তারিখ: ৪/১১/২০২১
মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তা
রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও শিল্প পুনর্গঠন মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জীর প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি।
advertisement
তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
পাশাপাশি সুব্রতদা ক্রেতা সুরক্ষা, স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দপ্তরের মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। হাসিমুখে তিনি জেলায় জেলায় ঘুরে আমাদের সরকারের কাজে অতুলনীয় অবদান রেখেছেন।
এছাড়া কলকাতার মেয়র হিসাবে কলকাতার সামগ্রিক উন্নয়নে তাঁর বিশেষ ভূমিকা স্মরণীয়।
সুব্রতদা ছাত্র আন্দোলনে সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত থেকেছেন। ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকেই আমি তাঁর সঙ্গে থেকেছি, তাঁর নেতৃত্বে বড় হয়েছি। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড এবং শারদীয়া দুর্গাপূজার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
সুব্রতদার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক ছিল। তিনি আমার অগ্রজ ও অভিভাবকতুল্য ছিলেন। তাঁর প্রয়াণ আমার কাছে এক বিরাট ক্ষতি শুধু নয়, রাজ্যের তথা দেশের রাজনৈতিক জগতে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি।
আমি ছন্দবাণী-বৌদি সহ সুব্রতদা'র পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়'
ছাত্র আন্দোলন থেকে কলকাতার মেয়র, প্রশাসক, দলের নেতা, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, পুজো প্রিয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের জন্য লেখা শোকবার্তায় তাঁর বিভিন্ন দিকে একজন দক্ষ মানুষ ও শিক্ষক হওয়ার কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাংলার রাজনীতিতে একজন বর্ণময় চরিত্র এবং তাঁর হাতেই কলকাতা পুরসভার স্বর্ণযুগের শুরু বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: 'ঈর্ষণীয় রাজনৈতিক জীবন', সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ দিলীপ-সুকান্ত-শুভেন্দুরাও
২০০০ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর ওই বছর কলকাতার পুরভোটের সময় কংগ্রেসের বিধায়ক পদ ধরে রেখেই ৮৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের প্রতীকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এর পর সেখান থেকে জিতে এবং কলকাতার মেয়র হন তিনি। একগুচ্ছ সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়ে ওই সময় তিনি বদলে দিয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার কাজকর্মের ধাঁচ। এখনও পুরকর্মীদের মুখে শোনা যায়, ওটাই ছিল কলকাতা পুরসভার 'স্বর্ণযুগ'-এর শুরু।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে একে-একে সকলেই, প্রিয় 'সুব্রত দা'-কে হারিয়ে শোকে পাথর
২০১১ সালে তৃণমূলের প্রতীকেই বালিগঞ্জের বিধায়ক হন তিনি। ১৯৭১ সালে লড়েছিলেন এই বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকেই। তার পর অনেক কেন্দ্র ঘুরেফিরে আবার সেই বালিগঞ্জেই। কলকাতায় এসে পাকাপাকি ভাবে থাকতে শুরু করার সময়েই তিনি যুক্ত হয়ে পড়েন গড়িয়াহাট এলাকার একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবের সঙ্গে। ১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটি 'সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ক্লাব' নামেই পরবর্তীতে পরিচিত হয়ে ওঠে। একডালিয়ার দুর্গাপুজোকে অন্যমাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। থিমের আড়ম্বড় নয়, বরং সাবেকি দুর্গাপুজোতেই বিশ্বাস রেখেছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।