একই সঙ্গে বিজেপি ও আরএসএস-এর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। চিঠিতে তিনি শান্তির আবেদন জানিয়ে লেখেন, পশ্চিমবঙ্গ সহিষ্ণুতার জমি, এখানে কোনও সম্প্রদায়কে অসম্মান করা হয় না।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপি এবং তাদের সঙ্গীরা রাজ্যে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে। “রাজ্যে যে মিথ্যার প্রচার চলছে, তার মূল জড়িতে রয়েছে আরএসএস,” বলেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, বিজেপি ও আরএসএস প্ররোচনা দিয়ে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাগুলিকে ব্যবহার করে ‘ভাগাভাগির রাজনীতি’ খেলতে চাইছে।
advertisement
ফ্রিজে রাখা ডিম কতদিনের মধ্যে খাওয়া উচিত? ডিমের ‘এক্সপায়ারি ডেট’ পেরিয়ে গেলে কী হয়…? জানলে চমকাবেন
২৪ ঘণ্টা ‘ফ্রিজ’ চলছে? না জেনেই ডাকছেন বিপদ…! সপ্তাহে ক’বার, কতক্ষণ বন্ধ রাখা উচিত?
মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “ধর্ষণ, অত্যাচার ও মনুষ্যত্বের অবমাননায় যখন লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যায়, তখন পশ্চিমবঙ্গ তার সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। বাংলাই দেশের উন্নয়ন ও মানবিকতার মানচিত্রে অগ্রণী রাজ্য। সমাজ সংস্কারে হোক বা স্বাধীনতা সংগ্রামে, বাংলার ভূমিকা অতীতেও ছিল অগ্রণী, আজও রয়েছে সেই পথেই।”
এর পর মমতা তুলে ধরেন বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চিত্র। দুর্গাপূজা, কালীপূজা, দোল, হোলি, গঙ্গাসাগর, ঈদ, বড়দিন, বুদ্ধপূর্ণিমা, মহাবীর জয়ন্তী— সব উৎসবই আন্তরিকতা ও সমান শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয় এই রাজ্যে, জানান মমতা। মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করাই প্রশাসনের অঙ্গীকার। “এই অশান্তির নেপথ্যে যারা রয়েছে, তাদের কড়া হাতে দমন করা হবে।” একই সঙ্গে রাজ্যের সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষকে শান্তি ও ঐক্য বজায় রেখে একে অপরের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এর পরেই মমতার বক্তব্য, রামনবমীর দিন রাজ্যে অশান্তি ছড়ানোর পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু বাংলায় রামনবমী শান্তিপূর্ণভাবেই পালিত হয়েছে। এখন ওয়াকফ আইন নিয়ে আন্দোলনের আবহে ফের উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে কেউ কেউ। তিনি অভিযোগ করেন, “বিজেপি এবং তার সঙ্গীরা যা প্রচার করছে তা মিথ্যা ও অপব্যাখ্যায় ভরা।”
তাঁর বার্তা, “উত্তরপ্রদেশে বুলডোজার চলে, জন্ম দেয় যন্ত্রণার। কিন্তু আমাদের পশ্চিমবঙ্গে যখন কেউ উৎপীড়িত বোধ করেন, আমরা পাশে দাঁড়াই। এটাই আমাদের মানবিকতা, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি।”
মমতা স্পষ্ট করে বলেন, যারা দাঙ্গার উসকানি দেয়, তারা বাইরে থেকে এসে দাঙ্গা বাধিয়ে পালায়। “আমাদেরই ভিতর থেকে একত্রিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। বিভেদের প্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। আসুন, একজোট হয়ে শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখি। যারা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করছে, তাদের বিশ্বাস করবেন না।” দাঙ্গার বিরুদ্ধে কড়া বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, _“যারা দাঙ্গার জন্ম দেয়, তারা বাইরে থেকে আসে এবং দাঙ্গা বাধিয়ে পালায়। ভিতর থেকে আমাদেরই লড়তে হবে তাদের খারাপ কাজের বিরুদ্ধে। আমরা একত্রে বাঁচব, লড়ব এবং জিতব। বাইরে থেকে এসে যারা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার জন্ম দেয়, সংকীর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দাঙ্গা বাধায়—তাদের বিশ্বাস করবেন না।”
চিঠির শেষ অংশে তিনি আরও একবার আবেদন জানান, “দয়া করে ওদের কথায় বিশ্বাস করবেন না। আমরা সকলে মিলেমিশে থাকতে চাই। ওরা সংকীর্ণ নির্বাচনী রাজনীতির কথা ভেবে আমাদের মধ্যে ভাগাভাগি করতে চায়। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, আমরা একসঙ্গে বাঁচব, লড়ব এবং জয়ী হব। বিশ্বাস রাখুন, ন্যায় হবে। বাংলার মাটিতে কোনও সম্প্রদায়কে কখনওই নিঃসঙ্গ হতে হবে না।