স্বাধীনতা দিবস উদযাপন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগে ১৫ আগস্ট বাংলায় প্যারেড হত না। আমরা একমাত্র রাজ্য যারা স্বাধীনতা দিবসে প্যারেড করি। সেখানে সকলে অংশ নেয়। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে শ্রদ্ধা ও প্রণাম জানাই তাদের যারা জীবন দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। বাংলা নিয়ে গর্ব করার অনেক কারণ আছে। স্বাধীনতা আন্দোলনে যদি কেউ সব থেকে বেশি জীবন দিয়ে থাকে সেটা এই বাংলা। ফাঁসির মঞ্চে জীবন দিয়েছে সবচেয়ে বেশি এই বাঙালিরা। বাংলার এই মাটি সোনার মাটি।’’
advertisement
মুখ্যমন্ত্রী দেশের স্বাধীনতার পাশাপাশি নাগরিকের স্বাধীনতার কথা মনে করিয়ে বলেন, ‘‘আমরা কারও স্বাধীনতা কেড়ে নিতে দেব না। কাউকে কাড়তে দেব না। কারও নাগরিকত্ব অধিকার কাড়তে দেব না। আমি আমার প্রতিবাদ আজ জানিয়ে গেলাম। যার যা বোঝার বুঝে নিন। লড়াই অনেক করেছি। আবার করব। কারও অধিকার কেড়ে নিতে দেবো না। যতদিন বাঁচব লড়াই করে থাকব। দেশের সেরা বাংলা। অধিকারের লড়াই লড়ব। মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে দিচ্ছি না দেব না।এটা আজকের দিনে আমাদের শপথ। যতদিন বাঁচব লড়াই করে বাঁচব।লড়াইটাই জীবনের সংগ্রাম।’’ ‘‘আমাদের এখানেই আসল স্বাধীনতা। যার যা খুশি খাও। আর দিল্লি, মুম্বাইতে হরিয়ানাতে বলছে স্বাধীনতা দিবসে খাওয়া যাবে না ননভেজ।’’, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
বেহালার অনুষ্ঠানে নাগরিকত্ব প্রসঙ্গে মমতা আরও বলেন, ‘‘যারা বলছে বাবা মায়ের বার্থ সাটিফিকেট না দিলে জেলে ঢুকিয়ে দেব। আপনাদের বলছি, আপনাদের বাবা-মায়ের বার্থ সাটিফিকেট আছে তো? এটা কি গুপি গাইন বাঘা বাইনের ম্যাজিক চলছে? আধার কার্ড করতে হল। তার জন্য পয়সা দিতে হল। আবার অনেকে ডকুমেন্টস দেখাতে হল। বলেছিল আধার নাকি গ্রহণযোগ্য নয়। যাই হোক আজ সুপ্রিম কোর্ট থেকে কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছি। আমরা আমদের রাজ্যে ১০০% আধার করিয়েছি।’’
ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা SIR নিয়ে ফের কেন্দ্রের তুলোধনা করলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘২০০২ সালে SIR হয়েছিল। বাংলায় ২০০৪ সালে তা শেষ হয়। আধার কার্ড বাদ দিয়ে দিয়েছিল। আবার বাবা মায়ের জন্মের তারিখ সহ শংসাপত্র চেয়েছিল। ২০০২ থেকে কুড়ি বছর ফিরে যান। কজনের বাবা মায়ের জন্ম শংসাপত্র আছে? এই সরকারের যারা আছে তারা গা জোয়ারী করছে। কলকাতা শহরে যারা জন্মেছিল তাদের সার্টিফিকেট ছিল। জেলায় তো নেই। বাংলাদেশ থেকে যারা দেশ ভাগের পরে এক কাপড়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলে এসেছিল।তারা কাগজ আনতে পেরেছিল? যারা নাগরিকত্ব দিতে চায়, তারা নাগরিকত্ব কাড়তে চায়। আসলে এর মধ্যে দিয়ে এন আর সি করতে চেয়েছে।
ফের বাংলা অস্মিতা নিয়ে বিজেপি সরকারকে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘‘বিভেদের রাজনীতি যারা করেন, তারা জানুন, রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ, নেতাজীর কথা না শুনে মেকি নেতাদের কথা শুনব নাকি? বাংলা শুনলেই নাকি তাদের খারাপ লাগে? আমরা কিন্তু অন্য ভাষাকে সম্মান করি। বাংলার মাটি শিখিয়েছে সবাইকে ন্যায্য অধিকার দাও। বাংলায় কথা বলা কি অপরাধ? বাংলায় কথা বলায় কান কেটে দিয়েছো। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে অরিজিত সিং তারা বাংলার। অমিতাভ বচ্চন এখানে কাজ করতেন। বাংলায় কথা বললেই কান কেটে দিল। এখনও অবধি আমি ১০০০ জনকে আইনি সাহায্যে ফিরিয়ে এনেছি’’, এদিন বলেন মমতা।