গতকালই দলের আন্দোলন বিমূখীনতার সমালোচনা করে শুভেন্দু দৃষ্টান্ত হিসাবে টেনে এনেছিলেন মমতার সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের গণ আন্দোলনের সাফল্যের। আজ রাজনৈতিক রিপোর্ট পেশ করতে গিয়ে সেই শুভেন্দুই ফিরে গেলেন ৭০-এর দশকের নকশালবাড়ি আন্দোলন খ্যাত চারু মজুমদার-এর গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরার শ্লোগানে। রাজনৈতিক মহলের মতে, পঞ্চায়েতের আগে দলের আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে অতি বামেদের শরণ নিয়েছেন শুভেন্দু।
advertisement
আরও পড়ুন, প্রথমে টোটোয় ধাক্কা, রাস্তায় ছিটকে পড়তেই হাওড়ায় মহিলাকে পিষে দিল গাড়ি!
আরও পড়ুন, মস্কো থেকে গোয়াগামী বিমানে ফের বোমাতঙ্ক! ২৪০ জন যাত্রী নিয়ে উজবেকিস্তানে অবতরণ
মাও সে তুং-এর নেতৃত্বে চিনে কমিউনিষ্ট পার্টির প্রত্যাবর্তনে লং মার্চের এই শ্লোগানকেই আমাদের রাজ্যে ৭০ এর দশকে সফল ভাবে প্রয়োগ করে সমাজ রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গের নকশাল বাড়ি আন্দোলন খ্যাত চারু মজুমদার। তারপর সেই আন্দোলনের ধারা বহন করে নিয়ে গিয়েছেন কানু সান্যাল,জঙ্গল সাঁওতালরা।
তাৎপর্যপূর্ন ভাবে, রাজ্যে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম থেকে শুরু করে জঙ্গল মহলে সিপিএমের অত্যাচারকে মূলধন করে গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে, মমতার বিশ্বস্ত সেনাপতির ভূমিকায় সেদিনও ছিলেন আজকের শুভেন্দু। সেদিক থেকে আজ একেবারে বিপরীত মেরুর রাজনৈতিক অবস্থান থেকে শুভেন্দুর মুখে অতি বামের এই শ্লোগানে নতুন করে কৌতুহল তৈরি হল রাজনৈতিক মহলে।
সম্প্রতি,বাঁকুড়ায় সভা করার পর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জঙ্গল মহল জুড়ে পদযাত্রা করার কথা বলেছিলেন শুভেন্দু। আজ শুভেন্দুর পেশ করা রাজনৈতিক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় বিজেপির যে চার বিধায়ক অংশ নেন তারা হলেন বাঁকুড়ার সালতোড়ার তপশিলী জাতি ভুক্ত বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি, পুরুলিয়ার জয়পুরের বিধায়ক নরহরি মাহাত, সিপিএম থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এবং দূর্গাপুর পশ্চিম এর বিধায়ক লক্ষ্ণন ঘোড়ই। এই চার জনের মধ্যে আয়োজক জেলার জেলা সভাপতি লক্ষ্ণনকে বাদ দিলে বাকি দু'জন জঙ্গল মহলের বিধায়ক এবং একজন বামপন্থী রাজনীতি থেকে আসা বিধায়ক।
কেউ কেউ মনে করছেন, উত্তরবঙ্গের জন্য পৃথক রাজ্যের দাবি তোলার পর বিজেপির জঙ্গল মহলের বিধায়ক সাংসদরাও পৃথক রাজ্যের দাবিতে সুর মেলান। পৃথক রাজ্যের দাবিকে সরকারি ভাবে সমর্থন না করলেও, বঞ্চনার কারনে স্থানীয় মানুষের এই দাবিকে সঙ্গত বলেই মনে করে বিজেপি। সেদিক থেকে শুভেন্দুর রাজনৈতিক প্রস্তাবে এই নতুন শ্লোগানকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
রিপোর্ট পেশ করতে গিয়ে শুভেন্দু আরও বলেন, শুধু কেন্দ্রীয় ভাবে কর্মসূচি নিলে হবে না। নিচুতলা থেকে আন্দোলন তুলে আনতে হবে। ব্লক স্তরে আন্দোলন সংগঠিত করতে হবে। না হলে আন্দোলন শুধু খাতায় কলমেই থেকে যাবে। গ্রামের স্থানীয় স্তরে যে আন্দোলন হবে তাতে শুধু দলীয় কর্মী-সমর্থকদের শামিল করলেই চলবে না। তৃণমূল সরকারের দ্বারা যাঁরাই বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁরা অন্য দলের সমর্থক হতে পারেন, সাধারণ মানুষ হতে পারেন, তাঁদেরও শামিল করতে হবে।