আগামী ২২ জানুয়ারি বিধাননগর, চন্দননগর, শিলিগুড়ি এবং আসানসোল পুরনিগমে ভোট রয়েছে৷ এ দিন কলকাতা হাইকোর্টে পুরভোট পিছিয়ে দেওয়ার মামলার শুনানি চলাকালীন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করে বলেন, ২২ জানুয়ারির পুরসভা নির্বাচন অবিলম্বে বাতিল করা উচিত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের৷ কারণ য়ে পুরসভা এলাকাগুলিতে নির্বাচন হওয়ার কথা, তার বড় অংশই করোনার দাপটে কন্টেইনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে৷ তিনি আরও বলেন, 'গঙ্গাসাগর মেলা নির্দিষ্ট দিনের বিষয়, তাই তাকে পিছোনো যায় না বলে কড়া শর্ত আরোপ করেছে হাইকোর্ট। এখানে নির্বাচন পিছোনোর উপায় থাকা সত্বেও তা বিবেচনা করা হচ্ছে না৷'
advertisement
আরও পড়ুন: শীর্ষে কলকাতা, ৯ জেলায় দ্বিতীয় ডোজ না নেওয়ার প্রবণতা সর্বাধিক!চিন্তায় নবান্ন
বিকাশরঞ্জন বাবু বলেন, কমিশনের নির্দেশ মানা হচ্ছে না বলেই তাদের নতুন করে গাইডলাইন জারি করতে হচ্ছে৷ আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি যুক্তি দেন, 'এখন ভোট হলে আরও ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হবে। শুধুমাত্র গাইডলাইন তৈরি করে অবস্থার উন্নতি করা যাবে না। নির্বাচন কমিশন যে গাইডলাইন তৈরি করেছে সেটা কোন রাজনৈতিক দলই মানছে না। একাধিক জায়গায় কনটেইনমেন্ট জোন তৈরি হয়েছে। মানুষ এখান থেকে বেরিয়ে কীভাবে ভোট দিতে আসবেন? দুষ্কৃতীরা ভোট লুট করবে। কমপক্ষে এক মাস ভোট পিছিয়ে দিলে অসুবিধা কোথায়?'
আরও পড়ুন: গঙ্গাসাগর নিয়ে নতুন কমিটি, করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট বাধ্যতামূলক করল আদালত
কমিশনের আইনজীবী জিষ্ণু সাহা পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, 'রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই ৪ পুর নিগমে ভোটের নির্ঘণ্ট স্থির হয়েছে। রাজ্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়নি। ভোট পিছিয়ে দেওয়ার কোনও বার্তা রাজ্যের তরফে দেওয়া হয়নি। তাই ভোট পিছনোর সিদ্ধান্ত কমিশন নিচ্ছে না। আমরা সংশোধিত গাইডলাইন জারি করেছি। মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন। রাজ্য যদি নির্বাচন কমিশনকে গাইডলাইন বাস্তবায়নে সাহায্য করে তাহলে নির্বাচন করতে কোন অসুবিধা নেই। রাজ্য সম্পূর্ন লকডাউন ঘোষণা করেনি, তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো দরকার নেই।'
রাজ্য সরকারের আইনজীবী অনির্বাণ রায় জানান, রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে পর্যাপ্ত পুলিস কর্মী দিয়ে সাহায্য করতে রাজ্য সরকার সব সময় তৈরি।
এ দিন প্রধান বিচারপতি সরাসরি কমিশনের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, একক ভাবে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কমিশনের আছে কি না? জবাবে কমিশনের আইনজীবী জানা, 'ভোট পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আমাদের আছে৷ আমাদের কাল পর্য্যন্ত সময় দেওয়া হোক।'
বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে ভোট করানোর মতো পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী কমিশনের কাছে আছে কি না, তা জানতে চান প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব৷ আগামী বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটার মধ্যে হলফনামা আকারে এই তথ্য দেওয়ার জন্য কমিশনকে নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ৷
এর পাশাপাশি যে চার পুরনিগমে ভোট রয়েছে, সেখানকার সার্বিক কোভিড পরিস্থিতি কী, ওয়ার্ড ভিত্তিক কোথায় কতগুলি কন্টেইনমেন্ট জোন রয়েছে, কতজন আক্রান্ত তার বিশদ তথ্য বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটার মধ্যে রাজ্য সরকারকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট৷ চার পুরনিগমের কতটা অংশ করোনা মুক্ত, কতটা অংশে করোনা জোন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, তা জানাতে হবে কমিশনকে৷