বিচারপতি অমৃতা সিনহা এদিন নির্দেশ দেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে ওই সন্তানহীন দম্পতিকে।
৩০ বছরের দীর্ঘ বিবাহিত জীবনে হয়নি সন্তান। বাধ্য হয়ে পরিকল্পনা করেন টেস্ট টিউব বেবি নেওয়ার। কিন্তু সেখানেও বাদ সাধছিল বয়স। প্রয়োজন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি। কিন্তু স্বাস্থ্য ভবনের থেকেও অনুমতি না পেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কলকাতার এক দম্পতি।
advertisement
টেস্ট টিউব বেবি বা আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান নিতে চান বলে পিএইচএস ফার্টিলিটি ক্নিনিকে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই দম্পতি। কিন্তু তাঁদের জানানো হয় নিয়ম অনুয়ায়ী স্বামীর বয়স প্রয়োজনের বযসের থেকে বেশি। ফলে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন জানান দম্পতি। যাতে তাদের বংশরক্ষা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য ভবনও এই অনুমতি দেয়নি। বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন দম্পতি।
হাইকোর্ট সুত্রে জানা যাচ্ছে কলকাতার কাশীপুরের বাসিন্দা ওই দম্পতির বিবাহ হয় ১৯৯৪ সালে। কিন্তু ৩০ বছরে তাঁদের কোনও সন্তান হয়নি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে একটি ফার্টিলিটি ক্লিনিকে আইভিএফের মাধ্যমে সন্তান নেওয়ার জন্য আবেদন জানান তাঁরা। কিন্তু গত ২৭ জুন দম্পতিকে জানানো হয় নিয়ম অনুয়ায়ী স্বামীর বয়স যা থাকা প্রয়োজন তার তুলনায় বেশি। ফলে স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি লাগবে। নিয়ম অনুযায়ী এই পদ্ধতিতে সন্তান নিতে গেলে পুরুষের বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৫৫ বছর। আর মহিলাদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স হবে ৫০ বছর কিন্তু কাশীপুরের দম্পতির ক্ষেত্রে স্বামীর বয়স ৫৮। তাই স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি মেলেনি।
আরও পড়ুন: কোন ভিটামিনের অভাবে হাত ‘কাঁপতে’ শুরু করে বলুন তো? জেনে নিন ‘সঠিক’ উত্তর, নইলে…
বিচারপতি সিনহা দম্পতির উদ্দেশ্যে এদিন মন্তব্য করেন, ‘এই বয়সে এসে সন্তানের দায়িত্ব নিতে পারবেন তো? একটি সন্তানকে মানুষ করার জন্য পরিকল্পনা কী রয়েছে?’ ওই দম্পতির আইনজীবী অচিন জানা জানান, তাঁর মক্কেল আর্থিক ভাবে সমর্থ। সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে যা যথেষ্ট। এ ব্যাপারে তাঁরা মানসিক ভাবে দীর্ঘ দিন ধরে প্রস্তুতি নিয়েছেন। পুরুষের বয়স বেশি হলেও এ ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না।
রাজ্যের তরফে আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক জানান, “কেন্দ্রীয় সরকারের রুল অনুয়ায়ী বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে। একটা বাচ্চা জন্মের পর তার ভালোবাসা, যত্নের ভীষণ প্রয়োজন।একই সঙ্গে পরিবারের আর্থিক স্থিরতা না থাকলে বাচ্চাটি অবহেলিত হতে পারে।
এরপর বিচারপতি মামলাকারীর আইনজীবীর কাছে জানতে চান:–
মহিলা কী করেন? আইনজীবী উত্তরে জানান, তিনি গৃহবধূ। বিচারপতি জানতে চান, আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য আছে তো পরিবারের? আইনজীবী উত্তরে বলেন, আর্থিক ভাবে কোনও সমস্যা হবে না পরিবারের। স্বামী যিনি তাঁর নিজের ব্যাবসা রয়েছে। ফলে অসুবিধা হবে না।