সওয়াল জবাবের শেষে অবশ্য ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিজেপি-র সভায় অনুমতি দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ৷ সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেছিল রাজ্য৷
আগামী ২৯ নভেম্বর ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিজেপি-র সভায় অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকার৷ ওই সভায় উপস্থিত থাকার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের৷ সভার অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি৷ সভায় অনুমতিও দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ৷ সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য৷
advertisement
আরও পড়ুন: খাতায় সই করে আসা যাওয়া, বিধায়কদের ফাঁকিবাজি রুখতে বিধানসভায় কড় তৃণমূল
এ দিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলা উঠলে রাজ্যের পক্ষে আইনজীবী কিশোর দত্ত সওয়াল করে বলেন, ‘ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে যেখানে এই সভা হচ্ছে সেটা শহরের কেন্দ্রবিন্দু। শহর স্তব্ধ হয়ে যাবে। ওখানে ২১ শে জুলাই ছাড়া আর কোন সভা হয়না।’
এ কথা শুনেই প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘কেন ? ২১ শে জুলাই তারিখের বিশেষত্ব কী? এর জবাবে রাজ্যের আইনজীবী বলেন, রিগিং রুখতে প্রত্যেকের ভোটার কার্ড চেয়ে আন্দোলন, গুলি চলে। ১৩ জনের প্রাণ যায়। ১৯৯৪ সাল থেকে তৎকালীন সরকারের সময় থেকে অনুমতি নিয়ে ২১ জুলাই সভা হয়ে আসছে।’
যদিও রাজ্যের এই যুক্তি মানতে চাননি প্রধান বিচারপতি৷ ধর্মতলা চত্বর স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার যুক্তিও খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি৷ রাজ্যের আইনজীবীকে তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে এটা নতুন কিছু নয়, কেউ সাধারণ মানুষ নিয়ে ভাবেন না। সরকারি কর্মচারী, রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সবাই রাস্তা আটকে মিছিল করে। পুলিশ অনুমতি দিয়ে দেয়। আমি ২ বছরের উপর এখানে আছি, আমি দেখেছি এটা এখানে এটা খুব সাধারণ বিষয়। গতকালও পুলিশের পক্ষ থেকে ২টি চিঠি পাঠানো হয়েছে আমাদের বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করা নিয়ে। রাজ্যের আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতির পরামর্শ, বিধিনিষেধ আরোপ করে অনুমতি দিন। প্রধান বিচারপতি কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েই রাজ্যের আইনজীবীকে বলেন, অহেতুক সভার অনুমতি নিয়ে বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য। রাজনৈতিক রং চড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছে। পরোক্ষে সভাকে জনপ্রিয় করা হচ্ছে। ১০০০০ জমায়েত কথা থাকলে, পুলিশের এমন পদক্ষেপে ১ লক্ষ জমায়েত হয়ে যাবে মনে হচ্ছে। সবার সমান অধিকার রয়েছে। ২৭ জুলাই পর্যন্ত সমস্ত সভা শহরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে রাজ্যের আপিল মামলার আবেদবিবেচনা করবে আদালত।’
এই সূত্রেই ২১ জুলাইয়ের সভা বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন প্রধান বিচারপতি৷ তিনি বলেন, ‘আমরা একটা কাজ করছি, আমরা ২১ জুলাইয়ের সভাও বন্ধ করে দিচ্ছি। অযথা রাজনৈতিক রং দিচ্ছেন। সমস্ত সভা বন্ধ করে দেব।’ সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী বিধিনিষেধ মেনেই সভা হবে জানিয়ে দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ৷