ভাড়াবাড়ি হলেও এই বাড়ির প্রতিটি ইট, কাঠ, পাথরে চাপা পড়ে রয়েছে স্মৃতি। কিন্তু আর মাত্র কয়েকটা দিন তারপর হাতুরির আঘাতে একটু একটু করে বাড়িটি ভেঙে ফেলা হবে। একটা সময় পুরো বাড়িটাই মিশে যাবে মাটির সঙ্গে। এই কথাটা ভাবলে কেমন যেন বুকের ভিতরটা হুহু করে ওঠে। নতুন ঠিকানা হয়তো হবে কিন্তু এই পুরনো বাড়িটা আর ক'দিন পরে থাকবে না। এই কথাটি ভাবতে ভাবতেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন আশিষ। তিনি বলেন, "অনুভূতি বলতে গেলে একটা সুন্দর ডায়লগ বলতে হবে। প্রফুল্ল নাটকের শেষ সিনে আছে। 'বড়বউ আমার সাজানো বাগান শুকিয়ে গেল। তুমি আর কান্নাকাটি করো না।' আমার দশা হয়েছে তাই। এত সুন্দর করে সংসার সাজিয়েছি। এরপরে বুঝুন কী বলার আছে।"
advertisement
আরও পড়ুন: দুর্গা পিতুরি লেন পর্যবেক্ষণ করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা, কী বললেন তাঁরা?
আশিষের মতো ওই এলাকার বাকিদের মনটাও খুবই ভারাক্রান্ত। ১৭ দুর্গা পিতুরি লেনের বাড়ির সঙ্গেই ছোট সোনার গয়নার কারখানা ছিল। সেখানকার বাসিন্দা প্রিতম রাহা ও কারিগর কমল পালও এসেছিলেন। বাড়িটির কী হবে সেটা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে যাতায়াতের উপর কার্যত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে নিরাপত্তার কারণে। বাড়িতে অনেক কিছুই পড়ে রয়েছে। তবে এ দিন এসে নিয়ে গেলেন আরাধ্য দেবতাকে। প্রীতম বলেন, "বাড়িতে এখনও অনেক কিছু পড়ে আছে। সব নিয়ে যাওয়া কার্যত অসম্ভব। শুধুমাত্র ঠাকুরটা নিয়ে গেলাম। আগামিদিনে কী হবে ঠাকুরই জানে। তবে আমাদের পাড়াটা অনেক বদলে যাচ্ছে। যেখানে খেলাধুলো করতাম সেই জায়গাটা আর দেখতে পাবো না।"
এদিন ঘটনাস্থলে আসেন সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "মানুষের ক্ষোভ দুঃখ যন্ত্রণা চূড়ান্ত পর্যায়ে। ভাঙার কাজটা আমি দেখতে এলাম। যে প্রক্রিয়াটা শুরু হল। কোন বাড়িটা কেমন ভাবে ভাঙা হবে সেটা যাদবপুরের সঙ্গে কথা বলে কলকাতা পুরসভা মেয়রও ইতিমধ্যে বলছে যুগ্মভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে তারপরে বাস্তবায়ন হবে। কাজটা শুরু হোক এবং আমরা ওপর থেকে নজর রাখব।"
UJJAL ROY