একবার গ্রীষ্ম ও একবার শীতে। প্রথমদিকে ডোনারের সংখ্যা কম থাকলেও পরের বছরগুলো থেকে রক্তদাতাদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। পারিবারিক রক্তদান শিবিরের প্রথম দিকে শিবির পরিচালনার দায়িত্বে থাকতেন অনঙ্গ মুখোপাধ্যায়। পরবর্তী সময়ে তাঁর পুত্র মুরারী মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী রূপা মুখোপাধ্যায় পারিবারিক রক্তদান শিবির পরিচালনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। তবে শুধু তিনিই নন, সোদপুরের মুখোপাধ্যায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সবার সক্রিয় অংশগ্রহণে ধীরে ধীরে এই রক্তদান শিবিরের উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসতে থাকে।
advertisement
পরিবারের অন্যতম সদস্য মুরারী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘থ্যালাসেমিয়া রোগী আমার ভাইপো সৌভিকের চিকিৎসার প্রয়োজনে আমাদের পারিবারিক রক্তদান শিবির থেকে সংগৃহীত রক্ত সৌভিকের প্রয়োজনের পরেও ব্লাড ডোনার কার্ড উদ্বৃত্ত হতে শুরু করে। তখনই আমরা পরিবারের তরফে সিদ্ধান্ত নিই যে, একটিও সেই কার্ড নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।’’
রক্তদান শিবির আয়োজক পরিবারের তরফে নানাভাবে প্রচার শুরু করে অনেক মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ বাঁচিয়েছে আজ মুখোপাধ্যায় পরিবার। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অসহায় পরিবার সেই ডোনার কার্ড ব্যবহার করায় অনেক পরিবারের মুখেই নিয়মিত হাসি ফুটিয়ে চলেছে মুখোপাধ্যায় পরিবার। রবিবার এরকমই এক পারিবারিক রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হল সোদপুরের মুখোপাধ্যায় বাড়িতে। যে শিবির এখন রক্তদান উৎসবে পরিণত হয়েছে। কোভিডের সময়েও এই শিবির বন্ধ থাকে নি। নিয়ম করে বছরে দুবার আজও সেই রক্তদান মহান দানের আয়োজন করে আসছে মুখোপাধ্যায় পরিবার।
আরও পড়ুন– জেলায় জেলায় শীতের স্পেল, কলকাতায় ১৫ ডিগ্রির ঘরে নামল পারদ, জেনে নিন আবহাওয়ার আপডেট
কোভিডের সময় কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলেছে গোটা দেশ। আমাদের রাজ্যও। সেই সময়েও চলেছে সরকারি নিয়ম মেনে বাসের মধ্যে মুখোপাধ্যায় পরিবারের পারিবারিক ব্লাড ক্যাম্প। রবিবার ৩২ বছর পার করল মুখোপাধ্যায় পরিবারের পারিবারিক রক্তদান শিবির। যে শিবিরে পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও আশপাশের এলাকা থেকেও বহু রক্তদাতা মহানদানে সামিল হন। বছরে দুটো ক্যাম্প মিলিয়ে প্রায় ২২৫ থেকে ২৫০ জন রক্তদাতা রক্তদান করেন। গড়ে প্রায় ১৫০ জনকে প্রতি বছর ব্লাড ডোনার কার্ড দিয়ে অন্যের জীবন বাঁচিয়ে এক প্রকার আত্মার বন্ধনে বেঁধে নজির গড়েছে মুখোপাধ্যায় পরিবার। ৬০ থেকে ৬৫টি ডোনার কার্ড পরিবারের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত সৌভিকের জন্য রেখে বাকিটা পুরোটাই মানব সেবার কাজে ব্রতী হয়েছে সোদপুরের মুখোপাধ্যায় পরিবার। যত কষ্টই হোক, আগামীতেও এই কাজ করে যেতে চাই, শুধু ভালবাসা ও বন্ধনের তাগিদে। এই অঙ্গীকার নিয়েছে সোদপুরের মুখোপাধ্যায় পরিবার।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
