এ দিন ব্যাট করতে নেমে অশোক লাহিড়ি প্রথমেই পরিষ্কার করে দেন, বাজেটের উহ্য বিষয়গুলো নিয়েই কথা বলতে চান তিনি। বিধানসভায় অনুযায়ী মতদান এবং বিরুদ্ধমত শোনাই রীতি। অশোক লাহিড়ি তা জানেন ভালই। তাই শুরুতেই তিনি বলেন, আমার যুক্তিকে আপনারা খন্ডন করতেই পারেন।
কী যুক্তি অশোক লাহিড়ির? বালুরঘাটের বিধায়ক স্পষ্টই বললেন পশ্চিমবঙ্গ পিছিয়ে পড়ছে। পশ্চাদগমনের সূচক হিসেবে অশোক লাহিড়ি চিহ্নিত করলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্য ছেড়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি, ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যত্র পড়তে যাওয়া, কথায় কথায় চিকিৎসার জন্য ভেলোর যাওয়ার প্রবণতাকে।
advertisement
প্রবীণ অর্থনীতিবিদ বলছিলেন, "জনগণকে বাজেট এর মাধ্যমে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। রাজ্যে অনেক জনকল্যাণমুখী প্রকল্প চালু হয়েছে। শ্রী ও ধারা দিয়ে একাধিক প্রকল্প চালু রয়েছে। স্নেহ দিয়ে অঞ্জলি দিয়েও নানা প্রকল্প চালু আছে। " দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির অভিযোগ কেন্দ্রের নানা প্রকল্প রাজ্য নিজের নামে চালাচ্ছে। অশোক লাহিড়ি তেমন কোনও কথা বলেননি। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মত তিনি ঘুরিয়ে নাক দেখিয়েছেন। খানিকটা শ্লেষের সুরেই তিনি বলেন, "এতগুলি জনকল্যাণমুখী প্রকল্প কী করে আপনারা চালাচ্ছেন, এতো অমানবিক পরিশ্রম! এর পরেই তাঁর টিপ্পনী, এসব প্রকল্প বাকি রাজ্য চালু করছে না কেন? ওদেরকে উন্নয়নে মন নেই নাকি তারা জানেন না?" প্রবীণ অর্থনীতিবিদের নিদান , "এই প্রকল্পের জানলা দরজা খুলে দিয়ে স্বচ্ছতা আনা উচিত।"
ভবিষ্যতের রুট ম্যাপও কিছুটা বেঁধে দিতে চাইলেন দুঁদে অর্থনীতিবিদ। বালুরঘাটের বিধায়কের কথায়, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগে এখনও সমস্যা রয়েছে। জাতীয় সড়ক আধুনিক করার কোনও প্রচেষ্টাই নেই। স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলব না। স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভাঙাই ছিল। কোভিড সেটা দেখিয়ে দিল।
রাজ্যে সরকারকে খানিকটা পরামর্শের সুরেই অশোক লাহিড়ি বক্তৃতার শেষে বললেন, উন্নয়নের জন্য বাড়াতে হবে ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডিচার, অর্থাৎ পুঁজির বিনিয়োগ।
পক্ষ বিপক্ষ মত থাকবে। তবে রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা বলছেন চুলোচুলির যুগে বিধানসভায় অশোক লাহিড়ি মানে শুধুই শেখার সুযোগ, বিধানসভা কক্ষ যেন ক্লাসঘর।