স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রীর নাম সঞ্জনা সিংহ। ভবানীপুরের বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দা সে। সোমবার রাতে আলমারি থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এটি আত্মহত্যা হলেও পরিবার ও প্রতিবেশীদের বয়ানে উঠে আসছে একাধিক অস্বাভাবিক তথ্য।
উৎসবের রাত আতসবাজি, সেলফিতে মজে…ট্রেনের হর্ন শুনতে পেল না কেউ! পিষে গেল ৬১ প্রাণ!
advertisement
কালীপুজোয় বিপদসীমা পেরোল কলকাতার দূষণ! সবচেয়ে সংকটে কোন এলাকা?…দেখে নিন AQI রিপোর্ট
ভবানীপুরে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত সৎ মা, যিনি আরজি কর কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রাইয়ের বোন!
‘রাতভর পড়ানো হত, না পারলে মাথা ঠুকিয়ে দেওয়া হত’
মৃতার গৃহশিক্ষিকা জানিয়েছেন, “রাত্রে দুটো-তিনটে পর্যন্ত ওকে পড়ানো হত। না পারলে দেওয়ালে মাথা ঠুকে দিত। পরদিন পরীক্ষা থাকলে সারা রাত না ঘুমিয়ে পড়তে বাধ্য করা হত। আমি জানালা থেকে দেখেছি — বাবা-মা মারছে, স্যার মারছে। শারীরিক অত্যাচারটা হত পড়াশোনা নিয়ে, মানসিক অত্যাচার হত সব কিছু নিয়ে।”
তাঁর দাবি, মেয়েটির ফলাফল খারাপ হলে গালাগাল, চুল টানা, বেল্ট দিয়ে মারধর — এসব নিয়মিত চলত। “আমরা বিচার চাই। কে মারল, কেন মারা গেল, সেটা জানতে চাই,” — গৃহশিক্ষিকার বক্তব্য।
অভিযুক্ত সৎ মা, আরজি কর কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়ের বোন
এই ঘটনায় অভিযুক্ত সৎ মা সম্পর্কে জানা গিয়েছে, তিনি আরজি কর হাসপাতাল কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের বোন। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার জন্মদাত্রী মা কয়েক বছর আগে রহস্যজনকভাবে মারা যান। তখনও তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, এখন ফের মেয়ের মৃত্যুতেও একই প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে।
এক প্রতিবেশী বলেন, “এটা প্রথম নয়, আগেও ওই বাড়িতেই ওর স্ত্রী গলায় দড়ি দেয়। এখন মেয়েটার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। আমরা শাস্তি চাই — হয় ফাঁসি নয় জেল।”
প্রতিবেশীদের বিস্ফোরক অভিযোগ
প্রতিবেশীদের দাবি, সঞ্জনাকে প্রায়ই বেল্ট দিয়ে মারা হত, খেলতে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, এমনকি রাতভর জাগিয়ে পড়তে বাধ্য করা হত। স্থানীয় এক মহিলা জানান, “ওর ঠাকুমা নিজেই বলেছে, বেল্ট দিয়ে পেটাতো নাতনিকে। বাইরে বেরোতে দিত না।”
ঘটনার পর মঙ্গলবার সকাল থেকেই এলাকা উত্তপ্ত। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্তদের বাড়িতে চড়াও হন। অনেকেই মনে করছেন, এই মৃত্যু আত্মহত্যা নয়, বরং দীর্ঘ নির্যাতনের ফলেই এমন পরিণতি।
পুলিশের তদন্ত ও নতুন মোড়
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না, তবে পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত সৎ মা ও পিতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে।
এই ঘটনায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ তীব্র। তাঁদের বক্তব্য, “মা মরেছিল রহস্যজনকভাবে, এখন মেয়ে। এবার যদি বিচার না হয়, আমাদের প্রতিবাদ থামবে না।”
