কারণ ভবানীপুরে (Bhabanipur) তাঁরা জিতবেন, গত কয়েক দিন ধরে এমন দাবি কোনও বিজেপি (BJP) নেতাকেই করতে শোনা যায়নি৷ বরং গত বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণের পর থেকেই বিজেপি নেতারা নিজেদের মন্তব্যে ঠারেঠোরে মুখ্যমন্ত্রীর জয়ের মার্জিন কমিয়ে নৈতিক জয়ের উপরেই জোর দিয়েছেন৷ আর ভবানীপুরে জয় পরাজয় নিয়ে কোনও মন্তব্যই শোনা যায়নি বামেদের মুখে৷
advertisement
আরও পড়ুন: নজর ভবানীপুরে, ৩ আসনে ভোট গণনা LIVE
সীমানা পুনর্বিন্যাসের পর ২০১১ সালে ফের ভবানীপুর (Bhabanipur) কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়৷ ৩৪ বছরের বাম শাসন শেষ করে তৃণমূলের রাজ্যে ক্ষমতা দখলের সময় প্রথমে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের সুব্রত বক্সী৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মুখ্যমন্ত্রী হলেও এ বারের মতোই ২০২১ সালেও তাঁকে ভবানীপুর থেকে উপনির্বাচনে লড়তে হয়েছিল৷ কারণ তখন তিনি সাংসদ ছিলেন৷ সুব্রত বক্সী ইস্তফা দেওয়ার পর ভবানীপুর থেকে লড়ে জিতে আসেন মমতা৷
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সুব্রত বক্সী জিতেছিলেন ৪৯,৯৩৬ ভোটে৷ সেখানে উপনির্বাচনে মাত্র ৪৪ শতাংশ ভোট পড়া সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী হয়েছিলেন ৫৪,২১৩ ভোটে৷
২০১৬ সালেও ভবানীপুরে সহজ জয় পান মুখ্যমন্ত্রী৷ যদিও জয়ের মার্জিন অনেকটাই কমে গিয়েছিল তাঁর৷ ২০১৬-তে ভবানীপুরে ২৫ হাজারের কিছু বেশি ভোটে জয়ী হন মমতা৷ ২০১৬ লাবে ভবানীপুরে ভোট পড়েছিব ৬৬ শতাংশের বেশি৷
কয়েক মাস আগে বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুরে বিজেপি-র রুদ্রনীল ঘোষকে ২৮,৭১৯ ভোটে হারান তৃণমূলের শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়৷ গত বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুরে ভোট পড়েছিল ৬১ শতাংশের কিছু বেশি৷
অতীতের এই সমস্ত পরিসংখ্যানকে একত্রিত করেই এবার ভবানীপুরে মমতার বিরুদ্ধে নৈতিক জয়ের দাবি করার অঙ্ক কষতে শুরু করেছেন বিজেপি নেতারা৷ কোনও ভাবে মমতার জয়ের মার্জিন যদি গত বিধানসভা নির্বাচনে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের জয়ের মার্জিনের থেকে কম হয়, তাহলেই এই নৈতিক জয়ের সাফল্যের দাবিতে সরব হবেন তাঁরা৷
আর উল্টো পরিকল্পনা তৃণমূল শিবিরে৷ মুখ্যমন্ত্রীর জয়ের থেকেও জয়ের ব্যবধান নিয়েই শুরু থেকে বেশি মাথাব্যথা ছিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের৷ মুখ্যমন্ত্রীর জয় নিশ্চিত জেনেও তাই ভবানীপুরে প্রচার থেকে শুরু করে ভোটদানের হার বাড়াতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি তৃণমূল নেতারা৷ উপনির্বাচনে ভবানীপুরে ভোট পড়েছে ৫৭ শতাংশের সামান্য বেশি৷ ফলে ২০১১-র মতো ব্যবধান না হলেও মুখ্যমন্ত্রীর জয়ের ব্যবধান যাতে কোনওভাবেই ২০২১-এ তৃণমূলের জয়ের ব্যবধানের থেকে না কমে, সেটাই প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল তৃণমূলের৷ শেষ পর্যন্ত ভবানীপুরে কার অঙ্ক মেলে, এখন তারই অপেক্ষা৷