অভিনেত্রী ও তাঁর স্বামীর অভিযোগ, তাঁরা গত ১১ ফেব্রুয়ারি গাড়ি ভাড়া দেন ওই অ্যাপ ক্যাব সংস্থায়। দুপুর ১২ থেকে সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত বুকিং ছিল। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও কোনওভাবে গাড়ি ফিরে আসেনি । ওই অ্যাপ ক্যাব সংস্থা থেকে বলা হয়, ৬০ ঘণ্টা ভাড়া দিতে হবে, এমনটাই দাবি অভিনেত্রীর । তাঁর অভিযোগ, ১২ তারিখ রাত ১০ টা বেজে গেলেও গাড়ি ফেরেনি। ১৩ তারিখ হঠাৎ বাড়িতে চার জন অপরিচিত ব্যক্তি আসেন। তারা গাড়ি কাগজ ও নথিপত্র চান ওই অভিনেত্রীর থেকে ।
advertisement
অভিনেত্রী মৌসুমীর দাবি ওই অপরিচিতরা তাঁকে জানান , অভিনেত্রীর স্বামী অরিজিৎ সান্যাল গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। তাই গাড়ির কাগজ নিতে এসেছেন তাঁরা। শুনে হতবাক অভিনেত্রী ও তাঁর স্বামী। কারণ তাঁরা জানেনই না তাঁদের অজান্তে গাড়ি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। মৌসুমী ওই ব্যক্তির থেকে জানতে পারেন, ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকায় খড়দহের মোহিত দদলানি নামে এক ব্যক্তি গাড়ি কিনতে রাজি হন। তার মধ্যে ২ লক্ষ টাকা মোহিত নাকি দিয়েও দিয়েছেন প্রতারকদের। বাকি ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, গাড়ির কাগজ পেলে তখন দেওয়ার কথা ছিল যাদবপুরে। অভিযোগ, সেই অনুসারে মোহিতবাবু যাদবপুরে আসেন।
আরও পড়ুন : খোলা বাজারে স্বল্প মূল্যেই হাজির ডিভাইস! লক না খুলেই চুরি হতে পারে আপনার গাড়ি
অভিযোগ, কিন্তু যে ফোন নম্বর দেওয়া ছিল সেটায় যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করেও যাদবপুরে প্রতারকরা আসেনি। তখন মোহিত চলে আসেন অভিনেত্রীর বাড়িতে। কারণ প্রতারকরা অভিনেত্রীর স্বামীর আধার কার্ড ডিটেইলস দিয়ে প্রতারকের ছবি দিয়ে জাল আধার কার্ড বানিয়েছে বলেও অভিযোগ মৌসুমীর। এর পর মোহিত নামে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে ১৩ তারিখই অভিনেত্রী মৌখিক অভিযোগ জানান বাঁশদ্রোণী থানায়। ১৪ তারিখ অভিনেত্রীর স্বামী লিখিত অভিযোগ করেন বাঁশদ্রোণী থানায়। লালবাজারে সাইবার ক্রাইম-এর সেলে অভিযোগ জানান ই-মেইল এর মাধ্যমে।
আরও পড়ুন : ম্লান মোমো, চাউমিন! শীত পিছু হটতেই ভিড় ফুচকাকাকুর পাশে
অভিনেত্রী লিখিত অভিযোগ করেন ওই অ্যাপ ক্যাব সংস্থার বিরুদ্ধে। পুলিশের সহযোগিতায় অবশেষে গাড়ি ফেরত পান অভিনেত্রী। প্রতারকরা আইনজীবী মারফত ২ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার টোপ দেন খড়দার মোহিত বাবুকে । ১৪ ফেব্রুয়ারি টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল।
আরও পড়ুন : তিনি এলেই চিতল, কাতলার হরেক পদ রান্না হত, স্মৃতিতে স্তব্ধ বাপ্পি লাহিড়ির মাসির বাড়ি
কিন্তু অভিযোগ, নির্দিষ্ট দিন পেরিয়ে গেলেও টাকা পাননি মোহিত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ আইনজীবীর পাত্তা নেই, প্রতারকদেরও পাত্তা নেই। এখন মাঝখানে পড়ে গিয়েছি। আমি প্রতারণার শিকার হয়ে গিয়েছি।’’ অভিনেত্রী ও তাঁর স্বামী গাড়ি ফেরত পেলেও খড়দহের বাসন্দা মোহিত দদলানি এখনও টাকা ফেরত পাননি। তিনি খড়দা থানায় জেনারেল ডায়েরি করেছেন। কিন্তু এখনও অধরা প্রতারকরা।
মোহিতবাবুর দাবি প্রতারকরা তাঁকে বোঝান যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তাদের আত্মীয়। তাই ২ লক্ষ টাকা দ্রুত দরকার। তাই তাঁরা গাড়ি বিক্রি করছেন। অভিযোগ এ ভাবে একদিকে মোহিতবাবু দদলানি এবং অন্যদিকে অভিনেত্রী মৌসুমী স্যান্যাল-দু’ জনকেই একসঙ্গে ঠকিয়ে অভিনেত্রীর অজান্তে গাড়ি বিক্রি করে দেয় প্রতারকরা। অভিনেত্রীর দাবি, এর পিছনে বড়সড় গাড়ি চুরির চক্র কাজ করছে। তিনি গাড়ি ফেরত পেলেও আর কেউ যেন এমন প্রতারণার শিকার না হন সেই কারণে তিনি সতর্ক করতে চান সকলকে।