শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। ৩০ জুনের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের আর কোনও বৈঠক হয়নি। তাহলে এত সংখ্যক বেসরকারি বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিলের সিদ্ধান্ত কোন এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে নেওয়া হয়েছে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেই প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেন এই দুই সদস্য।
advertisement
পাশাপাশি, ওই দুই সদস্য প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ৩০ জুন ২৫৩টি বিএড কলেজ বাতিলের মতো কোনও সিদ্ধান্ত এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে রেজলিউশন আকারে নেয়নি। তাহলে এই সিদ্ধান্ত কী ভাবে নেওয়া হল, তা নিয়ে কার্যত ফের প্রশ্ন তুলে সরব হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল ও কোর্টের মনোনীত সরকারি দুই সদস্য।
অন্যদিকে, গত রবিবার কালীপুজোর দিন চিঠি দিয়েছিল বি.এড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল ও কোর্টের মনোনীত সদস্যেরা। সেদিন রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য প্রাক্তন উপাচার্য মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কোর্টের সদস্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডল।
আরও পড়ুন: সুগার ৩৫০, কিডনির রোগ থার্ড স্টেজ! জেলে একী অবস্থা জ্যোতিপ্রিয়র.. আবারও কি হাসপাতালে?
মূলত, এই দুই প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল ও কোর্টের সরকার মনোনীত প্রতিনিধি। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়ে সরকার মনোনীত এই দুই সদস্য চিঠি দিয়েছিল। যদিও এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠি পাঠালেও সেই চিঠিতে কোনও স্বাক্ষর নেই বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় যে তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকবে, অন্তত সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট করে দিয়েছেন অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য। প্রসঙ্গত, কেন বিএড কলেজগুলির অনুমোদন বাতিল করা হল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তদন্তের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
সূত্রের খবর, বিএড কলেজগুলির বিরুদ্ধে ভুয়ো সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, একাধিক বিএড কলেজে নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষক না থাকারও অভিযোগ রয়েছে। এই কারণগুলোর জন্যই চলতি শিক্ষাবর্ষের জন্য ২৫৩ টি বি এড কলেজের অনুমোদন বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। তেমনটাই দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
যদিও রাজ্যে নজিরবিহীনভাবে ৬২৪টি বিএড কলেজের মধ্যে ২৫৩ টি বেসরকারি বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিল করে দেওয়াকে অনেকেই ইতিবাচক দিক থেকেই দেখছেন। বিশেষত, যাঁরা শিক্ষক হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দেন তাঁদেরই যদি প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকে তাহলে, তাঁরা পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ পরবর্তী প্রজন্মের শিক্ষক শিক্ষিকাদের কীভাবে দেবেন? তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষাবিদদের একাংশ।
আরও পড়ুন: একটা বিষধর সাপ অন্য বিষধর সাপকে কামড়ালে সব সময় কিন্তু সে মরে যায় না, কী হয় জানেন?
বি.এড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় গত শুক্রবার দাবি করেছিলেন, “আমরা এই বিষয়গুলি নিয়ে সতর্ক করে একাধিকবার কলেজগুলিকে জানিয়েছিলাম। তারপরেও কলেজগুলি কিছু না করায় আমরা এই অনুমোদন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।”
যদিও বেশ কয়েকটি কলেজ আগেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় দাবি, আদালত কলেজগুলির দাবি খারিজ করে দিয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ দাবি করা হয়েছে চলতি শিক্ষাবর্ষের জন্য এই কলেজগুলির অনুমোদন বাতিল করা হলেও আগামী বছর তাঁদের কাছে সুযোগ থাকছে নতুন করে অনুমোদন নেওয়ার। সেক্ষেত্রে, যে বিষয়গুলির জন্য তাদের অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে, তাদের সেই বিষয়গুলিকে সংশোধন করতে হবে।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়