কোভিড পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিমান পরিবহণ শিল্প। ২৮ মার্চ থেকে ভারতে কার্যত যাত্রীবাহী বিমান চলছেই না। জুন মাস থেকে দেশীয় উড়ান চালু হলেও আন্তর্জাতিক উড়ান এখনও দিনের আলো দেখেনি। তার উপরে কলকাতার অবস্থা আরও ভয়াবহ। উড়ান চালু হলেও সপ্তাহে দু'দিন করে পুরোপুরি লকডাউন চলছে। তার উপরে সংক্রমণ রুখতে পাঁচটি শহর থেকে উড়ান আসার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য সরকার। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে তিনটি শহর থেকে উড়ান কলকাতায় আসত, সেই মুম্বই, দিল্লি এবং চেন্নাই থেকে উড়ান আসছে না। এই অবস্থায় আগামী বছর দুইয়ের মধ্যে পরিস্থিতি ফিরবে এমন ধারণা করছে না তাবড় এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত পেশাদারেরা। উল্টে ক্রমশ ছাঁটাই এবং বেতন হ্রাসের ফলে ক্রমশ শিল্পের কঙ্কালসার চেহারাটা সামনে এসে পড়ছে।
advertisement
প্রাক্তন পেশাদার পাইলট সুমন্ত্র রায়চৌধুরী বলেন, "বিমান পরিবহণ শিল্পে সবচেয়ে বেশি লাভ হয় আন্তর্জাতিক উড়ান থেকে। ওই সব উড়ান অল্প করে চালু করা প্রয়োজন। তা ছাড়া, দেশীয় উড়ানের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট কোনও নিয়ম না থাকায়, কোথাও নির্দিষ্ট শহর থেকে উড়ান বন্ধ বা কোথাও আংশিক লকডাউন থাকায় টিকিট কাটা যাত্রীরা চাইলেও যেতে পারছেন না। এ ভাবে বিমান শিল্পের আরও ক্ষতি হচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, "এই অবস্থায় শিল্পের অবস্থা না ফিরলে ওই সব নতুন পড়ুয়ারা অথৈ জলে পড়বেন।"
এয়ার ইন্ডিয়ার প্রাক্তন কর্মকর্তা পার্থ চক্রবর্তী শিল্পের পরিস্থিতি ফেরার ব্যাপারে অবশ্য আশাবাদী। তিনি বলেন, "এই অবস্থা চিরকাল থাকবে না। আগামী বছরের মধ্যেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে।"
যদিও পার্থবাবুদের এই আশার কথায় মন গলছে না পড়ুয়াদের। অ্যাভিয়েশন ম্যানেজমেন্টের পড়ুয়া সোনাল কপূর বলেন, "আমি বিমান পরিবহণ শিল্পেই আসব বলে ঠিক করেছিলাম। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তাতে তো আর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এমনকি, একটি সংস্থায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও তা আপাতত বাতিল করেছি।"
আর এক পড়ুয়া নুয়ামান রিয়াজ বলেন, "আমার তো বিমান সংস্থাতেই কাজ করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু এখন তো লোক নেওয়ার বদলে ওরা ছাঁটাই করছে। তাই, আমাদের মতো নতুনদের কোনও জায়গাই মিলবে না। এখন অন্য ক্ষেত্রে চাকরির খোঁজ করা ছাড়া কোনও উপায় নেই।"