তাঁর বাংলাদেশের নাগরিকের একগুচ্ছ তথ্যপ্রমাণ দেখিয়ে এদিন বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার বিস্ফোরক অভিযোগ করে বলেন, ‘‘তিনি যে বাংলাদেশের নাগরিক তার যাবতীয় তথ্য প্রমাণ আমার কাছে আছে। বারাসতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে পাশে বসিয়ে রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপি বিধায়ক আলোরানি দেবীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে প্রশ্ন তোলেন, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে কী করে পশ্চিমবঙ্গে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেন? আমি শীঘ্রই আদালতে আলোরানির বাংলাদেশ যোগের যাবতীয় তথ্য প্রমাণ পেশ করে বিচার চাইব।’’
advertisement
দুই দেশের ভোটার তালিকায় কী করে একই ব্যক্তির নাম থাকে? প্রশ্ন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও। এই মর্মে বিধানসভার দলীয় সতীর্থ স্বপন মজুমদারকে যাবতীয় আইনি সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে দাবি করেন, ‘‘আলোরানি সরকার যখন তাঁদের দলে ছিল তখন তাঁর দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল না।’’ রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে গেরুয়া শিবিরের দুই বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ও স্বপন মজুমদার শনিবার যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন যে, আলোরানি সরকারের নাগরিকত্ব ইস্যুকে হাতিয়ার করে যত দূর যেতে হয় তাঁরা যাবেন।
বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় নাম, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে আলোরানি সরকারের নামের উল্লেখ এমনকী, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের সচিবকে লেখা আলোরানি সরকারের ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর লেখা চিঠির কপি যেখানে আলোরানি সরকার লিখেছেন, ‘‘ভুল করে দ্বিতীয়বার ভোটার হওয়ার কারণে ক্ষমা চেয়ে বাতিলের আবেদনপত্র সহ নানান নথি এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ, ‘‘নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ক বাড়াতে তৃণমূল কংগ্রেস বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের এ দেশে থাকার বন্দোবস্ত করে দিত ৷ কিন্তু ভারতের নাগরিকই নন, এমন একজনকে বাংলার নির্বাচনে প্রার্থী করা বেনজির ঘটনা ৷’’
আলো রানির মামলায় আদালতের নির্দেশের কপি ইতিমধ্যেই ট্যুইটও করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে বিজেপি-র স্বপন মজুমদারের কাছে পরাজিত হন আলোরানি৷ এই ফলকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দায়ের করেন তিনি৷ সেই মামলার শুনানিতেই বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়কের তরফে আদালতকে জানানো হয়, আলো রানি সরকারের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব রয়েছে৷ দাবির সমর্থনে বেশ কিছু নথিও আদালতে জমা দেন বিজেপি বিধায়ক ৷
ওই সমস্ত নথি খতিয়ে দেখে আলোরানির বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে রিপোর্ট জমা দেওয়া নির্দশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী ৷ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় আলো রানির নাম রয়েছে৷ ভারতে যেহেতু দ্বৈত নাগরিকত্ব নেওয়ার নিয়ম নেই, তাই আলোরানি ভারতের নাগরিকই নন বলে জানিয়ে দেয় হাইকোর্ট৷ নির্বাচনের ফলকে চ্যালেঞ্জ করে দােয়র করা তাঁর মামলা বাতিল করে দেয় হাইকোর্ট ৷ আলোরানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট ৷