২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট, বউবাজারের বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, বউবাজার স্ট্রিট, দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দারা ঘরছাড়া হয়েছিলেন। মেট্রো রেলের কাজের জন্য একের পর এক বাড়িতে বিশাল ফাটল ধরে। হেলে পড়েছিল বাড়ি। আতঙ্ক, ভয়ে ঘরছাড়া হয়েছিলেন অনেকেই। ফের সেই একই বিপর্যয় ঘটেছে। বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাসিন্দাদের দাবি, 'আতঙ্ক নিয়েই গত ২ বছর ৯ মাস ধরে কাটাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ি কাঁপত, উপায় ছিল না। বারবার মেট্রো রেলকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।সামনেই মেট্রো রেলের এই সংক্রান্ত একটি অফিস রয়েছে, সেখানেও গিয়ে কোনও লাভ হত না। সব কিছুর জন্যই মেট্রো দায়ী।'
advertisement
আড়াই বছর পর ভয়াবহ স্মৃতি ফেরে আবারও। ফের ১১ মে একের পর এক বাড়িতে বড়সড় ফাটল দেখা দেয়৷ বাড়ি পুরো ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় আবারও ঘরছাড়া হন অনেকেই।
এলাকায় গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন কেএম আরসিএল আধিকারিকেরা।প্রকল্প নির্মাণ সংস্থা কেএমআরসিএল জানিয়েছে, মেট্রোর লাইনে ক্রস প্যাসেজে কাজ চলাকালীন সেখান থেকে জল বার হতে দেখেনে কর্মীরা৷ উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা যাবেন ঘটনাস্থলে৷ যে সব বাড়িতে ফাটল ধরেছে সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর কাজ শুরু করেছিল। স্থানীয় কাউন্সিলর লিখিত চেয়েছেন, ফলে বাসিন্দাদের সরানোর ক্ষেত্রে সাময়িক জটিলতা এসেছে। কেএমআরসিএল, নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলে লিখিত দেবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যাঁরা দু' তিন বছর আগে বাড়ি ছেড়ে গিয়েিছলেন, তাঁরা এখনও ফিরতে পারেননি৷ তাই এবার আর নিজেদের বাড়ি ছেড়ে বের হতে নারাজ তারা৷ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন এলাকার কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, 'প্রাণ ভয়ে আমরা রাস্তায় নেমে এসেছি৷ কিন্তু কার ভরসায় কোথায় যাব? আগে যাঁরা বাড়ি ছেড়ে গিয়েছেন, তাঁরা এখনও ফিরতে পারেননি৷'
বউবাজারের মদন ঘোষ লেনের একাধিক বাড়িতে এ দিন ভোর থেকেই ফাটল ধরা পড়েছে৷ মেট্রো সূত্রে খবর, ওই অংশে সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শেষ৷ বর্তমানে সুড়ঙ্গে কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ চলছে৷ ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর দায়িত্বে থাকা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার এন সি কারমালি জানিয়েছেন, 'বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে৷ হোটেলে নিয়ে রাখা হবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে৷ পনেরোটি মতো পরিবার রয়েছে৷ আমাদের পক্ষ থেকে যা করণীয়, করা হচ্ছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে৷' তাঁর আরও দাবি, 'ফাটল সবে ধরতে শুরু করেছিল৷ খুব ভয়ের কিছু নেই৷ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই ওই পরিবারগুলিকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে৷' মেট্রো কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে অবশ্য বাড়ি ছাড়তে নারাজ ওই বাড়িগুলির বাসিন্দারা৷ অনেকেই ভিতরে ঢুকে জরুরি সামগ্রী ও নথি বের করে আনছেন৷ গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার৷