৩০ অক্টোবর শব্দ তাণ্ডবের শিকার এই পরিবারের বৃদ্ধা ৷ রবিবার কালীপুজো উপলক্ষে জোরে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করলে বয়স্ক বৃদ্ধা ও তাঁর শিক্ষক পুত্র-পুত্রবধূর ফ্ল্যাটে হামলা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠে স্থানীয় ক্লাবের বিরুদ্ধে ৷ ঢিল মেরে বাড়ির জানলার কাচ ভাঙচুর করা হয়। গালিগালাজ ও পরিবারের অন্য সদস্যদের হেনস্থার অভিযোগও উঠছে। বালিগঞ্জ প্লেসের মতো অভিজাত এলাকায় এই ঘটনায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
advertisement
ঘটনার পর ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলে পুরো ঘটনার বিবরণ লিখে একটি পোস্ট করেন নিগৃহীত বাসুদেব ঘোষ ৷ বালিগঞ্জ প্লেসের মতো অভিজাত এলাকায় এমন ঘটনার অভিজ্ঞতা চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ৷ তাঁদের পোস্টকে সমর্থন করে পবিত্র সরকার-সহ একাধিক বিশিষ্টজন ঘটনায় পুলিশি হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন ৷
৩০ অক্টোবর ২৯/১ বালিগঞ্জ প্লেসে, ঘোষ পরিবারের বাড়ির একতলায় একেবারে জানলার নীচেই চলছিল নেতাজি সংঘের কালীপুজো উপলক্ষে ডিজের অনুষ্ঠান। তার জেরে ৮০ বছরের অঞ্জলি ঘোষের পক্ষে ঘরে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে । রাত দশটার পরও অনুষ্ঠান চলায় ক্লাব সদস্যদের কাছে মিউজিক থামানোর আর্জি জানান অঞ্জলিদেবীর ছেলে বাসুদেব ঘোষ। অভিযোগ, তখনই পাড়ার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা এই পরিবারটিকে ফ্ল্যাটে ঢুকে হুমকি দেয় ক্লাব সদস্যরা।
সোমবার ভোরে নিজের ফ্ল্যাটের জানলার কাচ ভাঙার শব্দে ঘুম ভাঙে অঞ্জলিদেবীর। ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা কাচে পাও কেটে যায় তাঁর।
ঘোষ পরিবারের অভিযোগ, রাত ১০ টারও পরও অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলায় তাদের ফ্ল্যাটেও চড়াও হয়েছিল ক্লাব সদস্যরাও। তখনকার মতো ঘটনা মিটে গেলেও রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ শুরু হয় তারস্বরে ঢাক বাজানো। তারপরই সোমবার ভোরে ঢিল ছুড়ে কাঁচ ভাঙার অভিযোগ।
হেনস্থা বা কাঁচ ভাঙার অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে নেতাজি সংঘ ক্লাব। তাদের পাল্টা দাবি, ৪৭ বছর ধরে পুজো হলেও নেতাজি সংঘের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আগে কখনও ওঠেনি।
রবিবার রাত সাড়ে ৯ টায় গড়িয়াহাট থানায় ফোন করে অভিযোগ জানিয়েছিলেন অঞ্জলিদেবীর ছেলে বাসুদেব। কিন্তু পুলিশের সাড়া মেলেনি। তিনি লালবাজার ও দক্ষিণ কলকাতার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশকর্তাকেও ফোন করেন৷ কোনও লাভ হয়নি। কাঁচ ভাঙার পর পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পেশায় স্কুলের প্রধানশিক্ষক বাসুদেব ঘোষ। কোনও লাভ হয়নি তাতে ৷
কেন এই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা, জানতে বালিগঞ্জ থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন ঘোষ দম্পতি ৷ কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি ৷ হামলা ও হুমকির অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন শিক্ষক দম্পতি ও তাদের সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা মা ৷