মাসখানেক আগেই বেড়েছিল চালের দাম। বৃষ্টি এবং ধান চাষে ক্ষতির আশঙ্কায় সেবার দাম বাড়ে এক ধাক্কায় ১০ থেকে 1১২ টাকা। আবারও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দাম বাড়লো চালের। গত এক সপ্তাহে দুই থেকে চার টাকা প্রায় সব চালেই দাম বেড়েছে। রেগুলার বাসমতি বা সিদ্ধ বাসমতি চালের দাম তো এক ধাক্কায় 5 থেকে 6 টাকা বেড়েছে।
advertisement
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কতটা বেড়েছে গত এক সপ্তাহে চালের দাম। উত্তর কলকাতার কাঁকুড়গাছিতে ভিআইপি মার্কেটে বৃহস্পতিবার চালের দাম ছিল এরকম। ফাইন বাসমতি চালের দাম এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯৬ টাকা, বৃহস্পতিবার ছিল ১০০ টাকা। সিদ্ধ বাসমতি চালের দাম এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬২ টাকা এখন ৬৬ থেকে আটষট্টি টাকা। মিনিকেট চালের দাম এক সপ্তাহ আগে ৪৪ টাকা ছিল এখন ৪৬ টাকা। বাঁশকাটি চালের দাম এক সপ্তাহ আগেই ছিল ৫২ টাকা এখন ৫৫ টাকা। রত্না চালের দাম এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৫ টাকা এবং ৩৮ টাকা। দাম বেড়ে বৃহস্পতিবার বাজার দর ছিল ৩৬ টাকা থেকে ৪০ টাকা।
আরও পড়ুন: সবুজ ঝড়েও ত্রিশঙ্কু চার পুরসভা, কংগ্রেস- নির্দলের সমর্থনে বোর্ড গঠনের পথে তৃণমূল
৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চাল বিক্রি করছেন ভিআইপি মার্কেটের বিক্রেতা তপন সাহা, তিনি জানান এই বছরে পরপর দু'বার যেভাবে চালের দাম বাড়ল তা তপনবাবুর নিজের ব্যবসায়ীক জীবনে এর আগে কখনও দেখেননি। বৃষ্টিতে ধান নষ্ট হওয়ার কথা মেনে নিলেও যুদ্ধের প্রভাবে চালের দাম বৃদ্ধি এটা মানতে পারছেন না প্রবীণ এই চাল ব্যবসায়ী। বাঁশকাটি চাল কিনতে এসেছিলেন পেশায় চাকরিজীবী শ্যামল মুখোপাধ্যায় বলেন, চাল তো আর কম কেনা যাবে না তাই রান্নাঘরের বাজেটে কাটছাঁট করতে হচ্ছে। সত্যি যেভাবে চালের দাম বাড়ছে কিছু বলার নেই। যুদ্ধের জন্য কেন চালের দাম বাড়বে এ কথাটাই বুঝতে পারছিনা।
আরও পড়ুন: দিনভর লেগেই থাকত পুরুষের আনাগোনা! আসত মহিলারাও! কী চলত বুঝতে পারছেন?
চালের দাম বাড়লেও গরমকালের বেশ কিছু সবজির দাম কিছুটা কমেছে, যেমন কমেছে জ্যোতি আলুর দামও। এদিন কাঁকুড়গাছি বাজারে পটল বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা প্রতি কেজি। বেগুন বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা কিলো, ঝিঙে ৬০ টাকা কিলো, ক্যাপসিকাম ৫০ টাকা কিলো, গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা কিলো। ৪০ টাকা কিলো সজনে ডাঁটা, ১০০ টাকা কিলো টমেটো, ২৫ টাকা কিলো শসা,পাতিলেবু ৪ টাকা থেকে ৬ টাকা প্রতি পিস, ৬০ টাকা কিলো লঙ্কা ১০০ টাকা কিলো, লাউ ২৫ থেকে ৩০ টাকা পিস। আলুর দাম ফের কিছুটা কমেছে । বৃহস্পতিবার কেজিপ্রতি আলু বিক্রি হয়েছে, জ্যোতি আলু কুড়ি থেকে ২২ টাকা এবং চন্দ্রমুখী আলু ২৮ থেকে ৩০ টাকা। পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা, আদা ৮০ টাকা, রসুন ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা প্রতি কিলো।
ফেব্রুয়ারির শেষদিকে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হওয়াতেই তেলের দাম এক ধাক্কায় বেড়েছিল অনেকটা। এক সপ্তাহে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আবারও বেড়েছে তেলের দাম। দুটাকা থেকে চার টাকা প্রতি কিলো তেলের দাম বেড়েছে। মানিকতলা বাজারের ব্যবসায়ী বিজয় সাউ বলেন, যুদ্ধের প্রভাবে এর আগেই একবার দাম বেড়েছে। বারবার এই যুদ্ধের কারণে এতটা দাম বাড়ার যৌক্তিক নয় বলেই এই ব্যবসায়ী মনে করেন। প্রশাসনের তরফে এনফর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ আরও একটু কড়া হলে এই দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে তিনি মনে করেন।
বিশ্বজিৎ সাহা