জ্বর, সর্দি, কাশিতে আমরা সাধারণত তেমন উদ্বগ্ন হতাম না। কিন্তু, করোনা আসার পরে সব হিসেবেই কেমন উল্টে পাল্টে গেছে। তার মধ্যে চলতি বছরের শুরুতে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে অ্যাডিনোভাইরাস। দমকে দমকে কাশি, ধুম জ্বর, গলা ব্যথা। এই সব হলে অবহেলা করবেন না একদম। করোনা বা ডেঙ্গি রিপোর্ট পজিটিভ না হলেও হতেই পারে এ অ্যাডিনোভাইরাসের কারসাজি। যে ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সি বাচ্চারা।
advertisement
অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে এবার তৎপর হয়েছে কলকাতা পুরসভাও। জারি হয়েছে বিশেষ নির্দেশিকা। সেই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, আক্রান্ত শিশুদের উপরে বিশেষ নজর দিতে হবে অভিভাবকদের। তাছাড়া, আক্রান্ত শিশুদের উপরে বিশেষ নজরদারির ব্য়বস্থা করছে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগও। এবার থেকে জ্বরাক্রান্ত শিশুদের বাড়িতে গিয়ে তাদের ফলোআপ করবেন চিকিৎসাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: অ্যাডিনোভাইরাস থেকে সাবধান! রোগ থেকে বাঁচাতে কী কী খাওয়াবেন বাচ্চাকে? জেনে রাখুন
কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে....
★শিশুদের জ্বর হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
★চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া জ্বর হলে শিশুদের কোনও ওষুধ নয়।
★চিকিৎসক, নার্স, এএনএম, আশা কর্মী এবং সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বিশেষ নির্দেশ
★কলকাতা পুর এলাকার সমস্ত বাড়ি গিয়ে শিশুদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীদের।
★শিশুদের জ্বর হলে, তা কতদিন ধরে থাকছে, তার বিস্তারিত কেস হিস্ট্রি নিয়ে পুরসভাকে জানাতে হবে
★বাড়িতে শিশুর জ্বর হলে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা সেই বাড়ির অভিভাবকদের এই রোগের বিশেষ লক্ষণ সম্পর্কে জানিয়ে আসবেন
★শিশুর অবস্থার অবনতি হলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে বা স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে অভিভাবকদের
এই নির্দেশিকায় কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে শুরু করে পুরসভার চিকিৎসক, নার্স, এন এম ও আশা কর্মী এবং পুরসভার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের কাজ স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে
আরও পড়ুন: ফের ভাইরাস-আতঙ্ক! জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট! এক্কেবারে করোনার মতো, বাচ্চাদের সামলে..
সব শেষে জোর দেওয়া হচ্ছে অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রান্ত প্রচারের উপরেও।
*বিভিন্ন ওয়ার্ডে শিশুদের জ্বর সম্পর্কিত প্রচার কর্মসূচি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কাউন্সিলরদের
কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র এবং স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে থাকা মেয়র পরিষদ অতীন ঘোষ জানান, কলকাতায় বাড়িতে বাড়িতে বাচ্চাদের জ্বর কেমন রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য কর্মীদের বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে করবেন কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীরা।
বর্তমানে কলকাতার বেশিরভাগ হাসপাতালে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছে শিশুরা। বিশেষ করে দুবছর থেকে পাঁচ বছর বয়সি শিশুদের অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। এই জ্বর নিয়ে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করতেই কলকাতা পুরসভার এই নির্দেশিকা জারি করেছে বলে জানান অতীন।