কলকাতা: রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়া SIR৷ আর এসআইআর ঘোষণার পর পরই আগরপাড়ায় বছর সাতান্নর প্রৌড় প্রবীর করের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে গত মঙ্গলবার৷ যা নিয়ে তুঙ্গে রাজনীতি৷ বিতর্ক দানা বেঁধেছে প্রৌঢ়ের দেহের পাশে উদ্ধার হওয়া একটি চিঠি থেকে, যেখানে লেখা ছিল ‘আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী৷’ বুধবার সেই প্রবীর করের বাড়িতে গেলেন ও তাঁর পরিবার পরজনের সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘‘এর বদলা তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ে ছাড়বে। সারা বাংলার একটাই স্বর, জাস্টিস ফর প্রদীপ কর। যারা এর পেছনে আছে তাদের জেলে পাঠাব৷’’
advertisement
এদিন প্রদীপ করের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অভিষেক৷ বলেন, ‘‘গতকাল দুপুরেই খবর পাই। অত্যন্ত দুঃখের ঘটনা। SIR ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই ঘটনা। SIR, NRC ভয়ে তিনি নিজেই এটা করেছেন। আমি গতকাল নিজে কথা বলেছি প্রদীপবাবুর পরিবারের সাথে। ওনার ভাইয়ের ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে। পরিবারের লোকের সাথে কথা বলে জানলাম উনি নিপাট ভদ্রলোক। দান ধ্যান করতেন। পাড়ায় মেলামেশা করতাম। এই আতঙ্ক। এই পাড়ায় ওনারা ৪০ বছরের বেশি বসবাস করছেন। সবাইকে হাতজোড় করে বলছি ভয় পাবেন না। আমরা আছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেঁচে আছেন। বাংলাদেশি বলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এত সহজ নয়।’’
আরও পড়ুন: ‘মুখ তো নীতীশ, কিন্তু রিমোট কন্ট্রোল..,’ বিহারে প্রথম প্রচারে রাহুল গান্ধি, পাশে তেজস্বী
এরপরেই সাধারণ মানুষকে আশ্বাস দিয়ে তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘কলোনি এলাকায় যাঁরা আছেন তাঁরা নির্ভয়ে থাকুন। একটা বৈধ ভোটার বাদ দিলে কমিশন ঘেরাও হবে এক লক্ষ লোক নিয়ে৷ কেউ ভয় পাবেন না। সব জায়গায় আমাদের কর্মীরা থাকবে। আমরা সাহায্য করব। তৃণমূল কংগ্রেস না থাকলে ভয় পেতেন। জবাব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে৷’’
এসআইআর ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকেও চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন অভিষেক৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার ভাবছে কী? অমিত শাহ তাঁর বাবার জন্মের শংসাপত্র দেখাতে পারবেন? কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটে অনেক মন্ত্রী আছেন তাঁরা দেখাতে পারবেন? যাঁরা কমিশনে থাকেন তাঁরা পারবেন? স্থানীয় বিজেপি নেতা আসলে গাছে, পোস্টে বেঁধে রাখবেন। গায়ে হাত দেবেন না। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। বলবেন পরিবারের শংসাপত্র আগে নিয়ে আয়। তারপর ছাড়ব।’’
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে বড় ঘোষণা! নীতীশ নিয়ে অবশেষে সিদ্ধান্ত, ‘কোনও আসন খালি থাকবে না’
এদিন কোচবিহারের দিনহাটাতেও এসআইআর-এর ভয়ে গলায় বিষ ঢালার কথা সামনে এসেছে৷ প্রদীপ করের বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে সেই ব্যক্তিরও সুস্থতা কামনা করেন অভিষেক৷ বলেন, ‘‘আগে জানলে প্রদীপবাাবুকে বাঁচাতে পারতাম। আজ দিনহাটায় যা ঘটল তা কাকতালীয় নয়। আবার বলছি এর জন্য দায়ী জ্ঞানেশ কুমার ও অমিত শাহ। ওরা ভাবছে ইডি আর ইসি দিয়ে টাইট দেবে। ক্ষমতা থাকলে মানুষের গায়ে হাত দিয়ে দেখাক।’’
