প্রথম দিনের হিসেব অনুযায়ী ৩৩৪০ জন রোগীর চিকিৎসা হয়েছে। ২৬০০ জন ব্যক্তিকে ওষুধ দেওয়া হয়েছে। ১৮১ জনকে রেফার করা হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “আগামী ৭৫ দিন ধরে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রজুড়ে সেবাশ্রয় স্বাস্থ্য শিবির আয়োজিত হবে। সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটিতে প্রতি ১০ দিন ধরে ৪০-৫০টি শিবির হবে, মোট প্রায় ৩০০টি শিবির অনুষ্ঠিত হবে ৭১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ৯৩টি ওয়ার্ডে, যেখানে ২৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন।”
advertisement
আরও পড়ুন: কলকাতায় জাঁকিয়ে শীতের আমেজ, ঠান্ডা কি আরও বাড়বে? আবহাওয়ার বিরাট খবর
৭৫ দিন ধরে ডায়মণ্ড হারবারের বিভিন্ন এলাকায় সেবাশ্রয় স্বাস্থ্য শিবির আয়োজন করা হবে। এই শিবিরগুলি সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটিতে ১০ দিন করে চলবে। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে গড়ে ৪০-৫০টি স্বাস্থ্য শিবির হবে। ‘সেবাশ্রয়’ একটা উদ্যোগ,যা অভিষেক গ্রহণ করেছেন। ভারতের ইতিহাসে এর আগে কেউ করেনি। আগামী ৭৫ দিনে ৩০০টি স্বাস্থ্য শিবির আয়োজিত হবে ডায়মন্ড হারবারের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র, ৭১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ৯৩টি ওয়ার্ডে।
ডায়মন্ড হারবার বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ৪০টি শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১টি মডেল ক্যাম্প এবং বাকি ৩৯টি সাধারণ শিবির। এই ব্যবস্থা অন্যান্য বিধানসভা কেন্দ্রের জন্যও প্রযোজ্য হবে। সাধারণ স্বাস্থ্য শিবিরগুলিতে থাকবে – রেজিস্ট্রেশন ও হেল্প ডেস্ক, চিকিৎসকদের জন্য দুইটি নির্ধারিত ঘর, ডাক্তারদের জন্য বিশ্রাম কক্ষ, রোগীদের জন্য অপেক্ষার জায়গা, চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত স্থান এবং বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়ার জন্য ফার্মেসি।
প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে গড়ে ৪০-৫০টি শিবিরের আয়োজন করা হবে। ২ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত ডায়মন্ড হারবারে ৪১টি শিবির হবে। এরপর ১২ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত ফলতায় ৪০-৪১টি শিবির হবে। ২২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিষ্ণুপুরে ৪৭টি শিবির হবে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেটিয়াবুরুজে ৩৬টি শিবির হবে। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাতগাছিয়ায় ৪৫টি শিবির হবে। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত বজবজে ৪২টি শিবির হবে। শেষ শিবিরটি হবে মহেশতলায়, যেখানে ৪ মার্চ থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত মোট ৪৫টি শিবিরের আয়োজন করা হবে।
শিবিরগুলির পরিকাঠামো সম্পর্কে ইতিমধ্যেই বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি শিবিরগুলিতে দেওয়া হবে – বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা, বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ, রেজিস্ট্রেশনের পরে প্রতিটি রোগীকে দেওয়া হবে একটি ইউনিক টোকেন আইডি এবং একটি সচেতনতা ও গাইডলাইন বুকলেট। বুকলেটে প্রেসক্রিপশনের জায়গাও থাকবে• প্রতিটি সাধারণ শিবিরে হবে নিম্নলিখিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা – বিএমআই, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হিমোগ্লোবিন, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, ইসিজি, ট্রিপল সিরোলজি, এইচআইভি, হেপাটাইটিস-বি এবং হেপাটাইটিস-সি।
আরও পড়ুন: মুখেই যত বড় কথা, ভারত চাইলে বাংলাদেশের কী করতে পারে! স্পষ্ট সেনাপ্রধানের মন্তব্যেই
এছাড়াও থাকবে – নেবুলাইজার, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, সিরোলজি কিট, হুইলচেয়ার, স্ট্রেচার, ডিজিটাল থার্মোমিটার, পালস অক্সিমিটার, গ্লাভস, মাস্ক, স্যানিটাইজার এবং অন্যান্য সরঞ্জাম উপস্থিত থাকবে• একটি শক্তিশালী রেফারেল ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে রোগীদের ১২টি হাসপাতালের মধ্যে কোনও একটিতে রেফার করা হবে। এর জন্য একটি নির্ধারিত দল থাকবে।
তালিকাভুক্ত ১২টি হাসপাতাল হল – ডায়মণ্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, এসএসকেএম-পিজি কলকাতা, বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস, এমআর বাঙ্গুর হাসপাতাল, বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, গার্ডেনরিচ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ, জগন্নাথ গুপ্ত ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতাল, ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস কলকাতা• সমস্ত ১২টি হাসপাতাল রেফারেল ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শিবিরে অ্যাম্বুলেন্সও থাকবে এবং প্রতিটি শিবিরের আগে ও পরে তা স্যানিটাইজ করা হবে। মেডিক্যাল বর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্পত্তির জন্য একটি নির্ধারিত দল থাকবে• শিবিরগুলি শেষ হলে ১৬ মার্চ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত একটি মেগা ক্যাম্প হবে।
এই পাঁচ দিনে ৩০০টি জায়গায় ফলো-আপ শিবির করা হবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কারও কোনও সমস্যা থাকলে, তাঁরা এই শিবিরে এসে সমস্যার সমাধান করাতে পারবেন। মডেল ক্যাম্পগুলিতে থাকবে – রেজিস্ট্রেশন ও সহায়তা ডেস্ক, ডাক্তারদের জন্য আলাদা বিশ্রাম কক্ষ, চিকিৎসকদের জন্য তিনটি ঘর, রোগীদের জন্য অপেক্ষার জায়গা, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত জায়গা, এবং বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণের জন্য একটি ফার্মেসি।
মডেল শিবিরগুলিতে দেওয়া হবে – বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ, রোগীদের ইউনিক টোকেন আইডি, সচেতনতা ও গাইডলাইন বুকলেট, ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক, মেডিক্যাল স্টাফ, নার্স, ল্যাব টেকনিশিয়ান, তিনজন এমবিবিএস ডাক্তার এবং আশা কর্মী। মডেল শিবিরগুলিতে হবে নিম্নলিখিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা – দাঁতের যত্ন, মৌখিক পরীক্ষা, চোখের পরীক্ষা, বিএমআই, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হিমোগ্লোবিন, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ইসিজি এবং ট্রিপল সিরোলজি। এছাড়াও থাকবে – ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন, কার্ডিয়াক মনিটর, দুটি ক্রিটিকাল ইউনিট বেড, ভেন্টিলেশন সুবিধা, ক্যান্সার স্ক্রিনিং, ইউসিজি, বিএমডি এবং গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জন্য অবজারভেশন রুম।
এর পাশাপাশি, শিবিরগুলোতে নিম্নলিখিত সুবিধাগুলিও থাকবে – নেবুলাইজার, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, সেরোলজি কিট, হুইলচেয়ার, স্ট্রেচার, ডিজিটাল থার্মোমিটার, পালস অক্সিমিটার, গ্লাভস, মাস্ক, স্যানিটাইজার এবং অন্যান্য• রোগীরা তাদের ইউনিক আইডি বুকলেটে পাবেন। বুকলেটে থাকবে কোনও ডাক্তার কোন রুমে কোন রোগীকে দেখবেন এবং কোন ফার্মেসি থেকে রোগী ওষুধ সংগ্রহ করবেন তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া থাকছে।
আবীর ঘোষাল