প্রধান বিচারপতি বলেন, ”কাল যদি কেউ বলে যে হাইকোর্ট ঘেরাও করা হবে, তাহলেও কি রাজ্য পদক্ষেপ করবে না? কেউ যদি বলে যে কোথাও কোনও বোমা রাখা আছে, তাহলে কি পুলিশ পদক্ষেপ করবে না? রাজ্য সাধারণ মানুষকে নিয়ে চিন্তিত নয়। এটা খুব উদ্বেগজনক পরিস্থিতি।” রীতিমতো রাজ্যের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে এমনই মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
advertisement
আরও পড়ুন: আমিষ না নিরামিষ? খাবার বৈষম্য নিয়ে তুমুল শোরগোল আইআইটিতে! পড়ল বিতর্কিত পোস্টার
বিচারপতির সংযোজন, ”রাজ্য সাধারণ মানুষকে নিয়ে চিন্তিত নয়। এটা খুব উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। যদি অনেকে মিলে কারও বাড়ি ঘেরাও করে তাহলে কি শুধু তিনিই প্রভাবিত হবেন? না, সাধারণ মানুষ প্রভাবিত হবেন। সাধারণ মানুষের হয়রানির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।” এখানেই শেষ নয়, দ্বায়িত্বশীল সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিদের কাছে এই ধরনের মন্তব্য অনভিপ্রেত। মন্তব্য প্রধান বিচারপতির।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের পর অপহৃতা ৫ বছরের শিশুকে শ্বাসরোধ করে খুন! নিহত বালিকার কাছে ক্ষমা চাইল কেরল পুলিশ
প্রধান বিচারপতির কথায়, ”শুক্রবার (২১ জুলাই) গোটা দিন নষ্ট হয়েছে। আদালত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমরা ১১:৩০ টার মধ্যে চলে যেতে বাধ্য হয়েছি। আইনজীবীরা আসতে পারেননি। আদালতের কর্মীরা ট্রেন ধরতে পারেনি।” যদিও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবীর মন্তব্য, ”সাধারণ মানুষের কোন অসুবিধা হবে না।” এরপরই প্রধান বিচারপতি বলেন, ”সেটা কে নিশ্চিত করবে? ২১ জুলাই আপনি আদালতে আসতে পেরেছেন?” অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবীকে প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির। অভিষেক – মমতার আইনজীবীর বক্তব্য শুনতে নারাজ প্রধান বিচারপতি। বলেন, ”যা বলার হলফনামায় বলুন।” ১০ দিনের মধ্যে সব পক্ষকে হলফনামা পেশের নির্দেশ।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুলাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের কর্মীদের বার্তা দিয়েছিলেন, ‘আপনাদের এলাকায় ব্লক থেকে শুরু করে বুথ স্তরে যত বিজেপি নেতা আছেন তার একটা তালিকা তৈরি করুন। আগামী ৫ আগস্ট সমস্ত বুথ, অঞ্চল, ব্লক, জেলা থেকে রাজ্য বিজেপির নেতাদের বাড়ি শান্তিপূর্ণভাবে ঘেরাও করা হবে। সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত বাড়ি ঘেরাও করা হবে।’ তবে তাঁদের বাড়িতে বয়স্ক কেউ থাকলে তাঁদের ছেড়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছিলেন অভিষেক। তারপরে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই নন, তাতে সায় দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে ঘেরাও করতে হবে। নির্বাচনে যেমন ১০০ মিটার দূরে ক্যাম্প হয় ঠিক সেরকমই ক্যাম্প করতে হবে। তাতে কেউ বলতে পারবে না যে অবরুদ্ধ হয়েছে।’ এরপরই অভিষেকের ঘোষিত ওই কর্মসূচির বিরুদ্ধে দায়ের হয় এফআইআর। হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হয় বিজেপি। এবার সেই কর্মসূচিতেই ‘না’ কলকাতা হাইকোর্টের।