লালন ফকির(১৭৭৪-১৮৯০) তাঁর জীবদ্দশায় অনেক বাউল গান লিখেছেন এবং গেয়েছেন। ঝিনাইদহ জেলার হরিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বালক বয়সেই তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। খুব ছোট বয়সে তীর্থ ভ্রমণে গিয়ে তিনি বসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। সেই সময় তাঁর সঙ্গী তাঁকে একলা ফেলে পালিয়ে যায়। এক মুসলমান ফকির সিরাজ সাঁই তাকে মৃত্যুমুখ থেকে তুলে নিয়ে আসে নিজের বাড়িতে এবং সেবা-যত্ন ও ওষুধ দিয়ে তাকে সুস্থ করে তোলে। সুস্থ হওয়ার পর লালন ফিরে আসে তার নিজের বাড়িতে কিন্তু তার বউ এবং আত্মীয়-স্বজনরা তাকে মেনে নেয় নি। কারণ তিনি অনেকদিন মুসলমানদের সংস্পর্শে ছিলেন বলে। পুনরায় সিরাজ সাঁই এর কাছে ফিরে যান লালন। এবং তাঁর কাছেই বাউল ঘরানা-তে নিজেকে সঁপে দেন। গুরুর মৃত্যুর পর লালন কালিগঙ্গা নদীর ধারে ছেউড়িয়া-তে নিজের আখড়া প্রতিষ্ঠা করে এবং গান তৈরিতে নিজেকে নিয়োজিত করে ৷ লালনের কোনও প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। কিন্তু ধর্মের ঊর্ধ্বে গিয়ে মানবিকতার গানই তিনি তৈরি করেছেন।
advertisement
দমদম সংশোধনাগারে অনুষ্ঠিত নাটকটিতে বসন্তের পর থেকে লালন সাঁই এর জীবন কাহিনী ধরা হয়েছে। পরিচালক বলেন, " নাটকটিতে দু’জন অভিনেতা লালনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। একজন কমবয়সী লালন চরিত্রে অভিনয় করেছেন পীযূষ ঘোষ এবং পরিণত বয়সের লালনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তুহিন রায়।"
সম্রাট আরও বলেন, তিনি এই সংশোধনাগারে ২০১৪ সাল থেকে কাজ করছেন। এখানে হিন্দু মুসলমান নারী পুরুষ সব রকম বন্দি রয়েছেন। তারা একসাথে আনন্দের সঙ্গে থাকে। প্রার্থনায় তারা একে অপরকে সাহায্য করে। একজন জেল আধিকারিক জানান, " লালনের ওপর নাটকটি এখন মঞ্চস্থ করার জন্য তৈরি। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে বা ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে এটা প্রথম মঞ্চস্থথ করার ইচ্ছে আছে আমাদের।"
দমদম সংশোধনাগারের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অরিন্দম সরকার বলেন, " আমরা কখনই আমাদের বন্দীদের মধ্যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ বিভেদ করিনা। আমরা তাদের একতার কথা বোঝাই সেই জন্যই আমাদের লালনের উপর এই নাটকটি মঞ্চস্থ করার জন্য বন্দীদের উৎসাহিত করেছি।’’
Shalini Datta