দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। ১৪ হাজারেরও বেশি শূন্য পদে রয়েছে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের ক্ষেত্রে। উচ্চ প্রাথমিকের মেধা তালিকা নিয়ে গোড়া থেকেই সতর্ক হয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন "আমরা আশা করছি জানুয়ারি মাসের মধ্যেই উচ্চ প্রাথমিকের মেধাতালিকা হাইকোর্টে জমা দিতে পারব। যদিও ওই সময় কিছু ছুটি রয়েছে। তবে আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের চেকিং প্রায় শেষ মুহূর্তে চলে এসেছে।"
advertisement
সাম্প্রতিক সময় স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠায় উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও সর্তকতামূলক পদক্ষেপ করেছে এসএসসি। একাধিকবার উচ্চ প্রাথমিকের মেধা তালিকা পরীক্ষা করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। শুধু তাই নয় টেটের ওএমআর শিটও চেকিং করেছে এসএসসি। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, "সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োগ নিয়ে একাধিক মামলা-মোকদ্দমা হয়েছে। নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। আমরা চাই নির্ভুল নিয়োগ হোক। তার জন্য আমরা একটু সময় নিয়েছি।" প্রসঙ্গত গত ৪ঠা নভেম্বর উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তারপর থেকেই উচ্চ প্রাথমিকের মেধা তালিকা নিয়ে চেকিং প্রক্রিয়া শুরু করে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
আরও পড়ুন: মন্ত্রীর সামনেই যুবককে সপাটে চড়! দিদির সুরক্ষা কবচে ফের বিতর্ক, এবার দত্তপুকুরে
আরও পড়ুন: ভারত জোড়ো যাত্রায় হাঁটার সময়ই হৃদরোগে আক্রান্ত! প্রয়াত পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদ
অন্য দিকে সম্প্রতি উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ নিয়ে ফের শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীরা। তৃণমূল ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু-এর সঙ্গে দেখা করেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ নিয়ে যাতে দ্রুত আদালতে প্যানেল পেশ করা যায় তার জন্যই চাকরিপ্রার্থীরা তা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদনও জানান। সেই সময় চাকরিপ্রার্থীদের তরফে দাবি করা হয় তাদের সামনেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে ফোন করে নিয়োগের সম্পর্কে জানতে চান শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
নিয়োগ নিয়ে কেন দেরি হচ্ছে সে বিষয়ে সম্পর্কেও জানতে চান চেয়ারম্যানের থেকে। যদিও চেয়ারম্যান শিক্ষামন্ত্রীকে জানান একটু সময় লাগলেও দ্রুত উচ্চ প্রাথমিকের মেধাতালিকা হাইকোর্টে পেশ করা হবে কমিশনের তরফে। যদিও শিক্ষামন্ত্রী চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন যাতে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা যায় সেই বিষয় নিয়ে আরও তৎপর হতে বলেই চাকরিপ্রার্থীদের দাবি।
চাকরিপ্রার্থীদের তরফে সুশান্ত ঘোষ বলেন "আমরা ৪৭ দিন ধরে আন্দোলন করছি। আমরা চাই দ্রুত নিয়োগ হোক।"প্রসঙ্গত ২০১৪ সাল থেকে চলছে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া। নিয়োগের দাবিতে সম্প্রতি মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে আন্দোলনে চালিয়ে যাচ্ছেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীরা। দীর্ঘ আট বছরেরও বেশি সময়সীমা ধরে চলা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একদম শেষ পর্যায়ে। নভেম্বর মাসে হাইকোর্টে উচ্চ প্রাথমিকের মেধা তালিকা জমা দেওয়ার কথা থাকলেও স্কুল সার্ভিস কমিশন এখনও পর্যন্ত সেই তালিকা জমা দিতে পারেনি।
যদিও কমিশনের তরফে দাবি করা হয়েছে তারা কয়েকবার পরীক্ষা করে তবেই মেধা তালিকা হাইকোর্টে জমা দেবে। সেক্ষেত্রে জানুয়ারি মাসেই জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলেই কমিশনের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ১৪ হাজারেরও বেশি শূন্য পদ রয়েছে এই নিয়োগের জন্য। তবে আপাতত শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দিন বৈঠকের আশ্বাস পেলেও চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন যে চলবে তা এদিন স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়