অনুমতি দেওয়ার আগে এদিন রাজ্যের উদ্দেশ্যে একগুচ্ছ প্রশ্ন ছোঁড়েন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বিচারপতি জানতে চান, "যে বিধিনিষেধের কথা আপনারা এখানে বলছেন সেটা রাজ্যের শাসক দলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য তো? রেড রোড বন্ধ করে যখন কর্মসূচি হয়, মিছিল হয় তখন পুলিশের অসুবিধা হয় না?"
বিচারপতি আরও বলেন, "কিছু দল যখন মিছিল করে তখন গোটা কলকাতা স্তব্ধ হয়ে যায়। আমি শাসক দলের কথা বলছি না। তখন তো পুলিশের কোনও অসুবিধা হয় না! মানুষ পরিবার নিয়ে রাস্তায় বেরোতে চায়, কিন্তু বেরোতে পারে না! তখন পুলিশের অসুবিধা হয় না ?" শাহীনবাগের ক্ষেত্রে আন্দোলন দীর্ঘদিন চলেছিল, দিল্লি স্তব্ধ হয়ে গেছিল, তাই সুপ্রিম কোর্টকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল। এখানে বিষয়টা সেরকম নয় বলে জানান বিচারপতি। তিনি বলেন, 'আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম যে, মিছিলের আবেদন সংক্রান্ত একটা রেজিস্ট্রার তৈরি করতে হবে, যাতে মানুষ দেখতে পায় কবে মিছিল আছে। সেটা এখনও তৈরি হয়নি।'
advertisement
যে রুটে মিছিল করার কথা বলা হচ্ছে সেটা মিছিলের জন্য নির্দিষ্ট করা কোনও রুট না। সওয়ালে জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি সওয়ালে আরও জানান, ওই এলাকাটি জনবহুল এলাকা, সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে। স্কুল ও অফিস যাত্রীর অসুবিধা হবে। ট্রাফিকের অসুবিধা হবে। অন্য রুটে অন্য জায়গায় করলে অসুবিধা নেই। আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি রুটে কর্মসূচি করতে দিতে রাজ্যের কোনও অসুবিধা নেই। নির্দিষ্ট জায়গাতেই কর্মসূচি করতে দিতে হবে এই ধরনের দাবি কেউ জানাতে পারেন না। এটা কারও অধিকারের মধ্যে পরে না। দিল্লিতেও কৃষক আন্দোলনের ক্ষেত্রেও সুপ্রিম কোর্ট একাধিক কড়া পর্যবেক্ষণ রেখেছিলেন।
"৩০ থেকে ৪০টি মামলা আমার কাছে এসেছে মিছিল করার অনুমতি চেয়ে। কেন আদালতকে বারবার হস্তক্ষেপ করতে হবে?"- প্রশ্ন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। "এরা আপনাদের অর্থাৎ রাজ্য সরকারি কর্মচারী। এরা কী চাইছে? মহার্ঘ ভাতা। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে অসুবিধা কোথায়? রাজ্যকে প্রশ্ন বিচারপতির। বিরোধিতা করা বা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পরে। মন্তব্য বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারেন, কিন্তু মিছিল বন্ধ করতে পারেন না।" মন্তব্য বিচারপতির। আগামী ৪ মে নবান্ন অভিযানের অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় কো-অর্ডিনেশন কমিটি সহ-সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ এই রায় বিচারপতির।