ওয়াইল্ডলাইফ পার্কে গেলে সেখানে জীবজন্তুর সঙ্গে ছবি তোলানো খুব সাধারণ একটা ব্যাপার! সেখানে জন্তুগুলো থাকে খাঁচার বাইরে, ফলে অনেক পর্যটকই তাদের সঙ্গে ছবি তুলে, তাদের নিজের হাতে খাইয়ে জীবনের কয়েকটা মুহূর্ত চিরস্মরণীয় করে রাখতে চান। কিন্তু @Kaylinmarie21 নামে এই TikTok ইউজার বুঝতে পারেননি যে মুহূর্তের মধ্যে তাঁর জীবন চলে যেতে পারত স্মরণের জগতে। কেন না, দেখতে যতই ছোটখাটো হোক না কেন, আদতে এই ব্লু রিংড অক্টোপাস পৃথিবীর সব চেয়ে বিষধর প্রাণী!
advertisement
এই মহিলা জানিয়েছেন যে তিনি প্রথমে এই প্রাণীটিকে হাতে নিয়ে ছবি তুলেছিলেন। ছোট আকারের অক্টোপাস দেখে তাঁর ভয়-টয় করেনি, বরং বেশ মজাই পেয়েছিলেন তিনি। তবে পরে বাড়ি ফিরে তিনি যখন এই ব্লু রিংড অক্টোপাস নিয়ে Google করতে বসেন, তখন তাঁর পিলে চমকে যায়! তিনি জানতে পারেন যে এটি বিশ্বের সব চেয়ে বিষধর প্রাণী, এক মিনিটের মধ্যে ২৬ জন প্রাপ্তবয়স্ককে মেরে ফেলার ক্ষমতা ধরে এই ব্লু রিংড অক্টোপাস!
জানার পরে মহিলা স্বভাবতই আতঙ্কে অস্থির হয়ে পড়েছিলেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ফোন করেন তাঁর বাবাকে। জানা গিয়েছে যে বেশ কিছু মেডিক্যাল টেস্টের পরে তাঁরা নিশ্চিত বোধ করেন। খবর অনুযায়ী, ওই মহিলার শরীরে বিষ ছড়ায়নি, তিনি সুস্থই আছেন! তবে দুর্ঘটনা যে কোনও মুহূর্তে ঘটে পারত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না!
আসলে অন্য়ের শরীরে এই ব্লু রিংড অক্টোপাস বিষ ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটা করে নীরবে। অনেক সময়ে সেই ব্যক্তি বা প্রাণী বুঝতেও পারে না যে তার শরীরে বিষ ঢুকছে। যখন বুঝতে পারে, তখন অনেকটা সময় চলে যায়। বিষ ছড়িয়ে যায় শরীরের সর্বত্র। ফলে, বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসে।
আতঙ্কের আরও একটি কারণ আছে। এই ব্লু রিংড অক্টোপাসের বিষের অ্যান্টিভেনম এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসা পদ্ধতি বলতে শুধু আক্রান্ত ব্যক্তিকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের সাহায্যে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। বেশির ভাগ সময়েই এই প্রাণীর বিষে আক্রান্ত হলে গা বমি ভাব শুরু হয়। ধীরে ধীরে তা অন্ধত্ব, সংজ্ঞাহীনতা, মোটর স্কিল হারিয়ে ফেলা, পেশি শক্ত হয়ে সারা শরীর প্যারালাইজড হওয়ার দিকে চলে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আক্রান্তের সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না বললেই চলে!