জানা গিয়েছে যে ভিয়েতনামের রাজধানী হানোইতে সম্প্রতি নিজের জীবন বিপন্ন করে এক দুই বছরের শিশুকন্যাকে বাঁচিয়েছেন এক ডেলিভারি ম্যান। তাঁর নাম গুয়েন গক মানহম (Nguyen Ngoc Manhm)। ইউনিকানাল নামে প্যারাগুয়ের এক ডিজিটাল টেলিভিশন নেটওয়ার্কেও উঠে এসেছে তাঁর এই অসাধ্যসাধনের কাহিনি।
গুয়েন জানিয়েছেন যে আর পাঁচটা দিনের মতোই তিনি ডেলিভারি ট্রাক নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন পথে। ওই ১২ তলা অ্যাপার্টমেন্টের সামনে যখন তিনি পৌঁছন, তখন তাঁর কানে এসেছিল এক শিশুর কান্না। যদিও সেই কান্না শুনে তাঁর কোনও বিপদের সম্ভাবনার কথা মাথায় আসেনি। শিশুরা নানা কারণেই কান্নাকাটি করে থাকে। ফলে ব্যাপারটাকে নিয়ে তেমন চিন্তা বোধ করার কোনও কারণ খুঁজে পাননি তিনি।
advertisement
কিন্তু এর পরেই যখন এক ব্যক্তি সাহায্যের জন্য আর্তস্বরে চিৎকার করতে থাকেন, তখন টনক নড়ে তাঁর। গাড়ি থেকে বেরিয়ে যে দৃশ্য তিনি দেখেন, তা ছিল গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো। গুয়েন দেখেন যে ওই অ্যাপার্টমেন্টের ১২ তলার ব্যালকনি থেকে ঝুলছে এক বাচ্চা মেয়ে। এক হাতে কোনও রকমে ব্যালকনিটা আঁকড়ে ধরে আছে সে। বেশ বোঝা যাচ্ছে যে কোনও মুহূর্তে সে আছড়ে পড়বে নিচে।
ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে যে এর পর আর দ্বিধা করেননি গুয়েন। বেশি কিছু ভাবেননিও। সোজা দৌড়ে গিয়ে ওই অ্যাপার্টমেন্টের কার্নিশ বেয়ে উঠতে থাকেন তিনি। চেষ্টা একটাই- যতটা সম্ভব উঠে বাচ্চাটাকে লুফে নেওয়া। শেষমেশ বাচ্চাটা যখন পড়ে যায়, তখন সৌভাগ্যবশত তাকে লুফে নিতে পারেন গুয়েন। আনন্দে জড়িয়ে ধরেই খেয়াল করেন যে তার মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে।
দেরি না করে এর পর গুয়েন বাচ্চাটিকে নিয়ে যান নিকটবর্তী হাসপাতালে। ডাক্তারেরা জানান যে বাচ্চাটির হিপ ডিজলোকেট হয়েছে, তবে সে প্রাণে বেঁচে যাবে।
এই ঘটনা আপাতত জীবন বদলে দিয়েছে গুয়েনের। প্রতি দিন অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছেন তিনি। যদিও তাঁর বক্তব্য- কোনও কিছু ভেবে এই কাজ তিনি করেননি। নিজের মেয়ের কথা ভেবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাচ্চাটিকে উদ্ধারের কাজে।