বিদ্রোহী ওয়াগনার গ্রুপের দুটি শহর দখল এবং মস্কোর দিকে অগ্রসর হওয়ায় পুতিন প্রহর গুনছেন। রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সিএনএনের রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পুতিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। একই সঙ্গে ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহের এই খবর ইউক্রেনের জন্য স্বস্তির চেয়ে কম নয়।
আরও পড়ুন- মোদির মার্কিন সফরে তারকা সমাহার, মুকেশ-নীতা আম্বানির সঙ্গে একফ্রেমে সুন্দর পিচাই
advertisement
আসলে ইউক্রেন যুদ্ধের পর রুশ সেনাবাহিনীর ভেতর থেকেই অনেক ধরনের বিষয় সামনে এসেছে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্লাদিমির পুতিন এর আগেও নিজ দেশে সমালোচিত হয়েছেন। এত সাহসিকতার পরও পুতিনের ক্ষমতার দম্ভ অনেকে ভাল চোখে দেখেননি।
এবার ওয়াগনার আর্মির বিদ্রোহের কারণে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম সেনাবাহিনীর সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। রুশ সেনাবাহিনীর এই যুদ্ধ তাদের নিজেদের যোদ্ধাদের সঙ্গে। সময়মতো সামাল না দিলে মস্কোর পতনের কারণও হয়ে উঠতে পারে এই বিদ্রোহ।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন শুরু থেকেই পুতিনকে নিয়ে সোচ্চার। ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধের পরে তার অবাধ্য আচরণ আরও বেড়েছে। ওয়াগনার গ্রুপ পুতিনের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে সামনে দাঁড়িয়েছে। পুতিন স্বীকার করতে বাধ্য হন, রোস্তভ অন ডনের প্রধান সামরিক ঘাঁটি তাঁর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ওয়াগনার গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে বিদ্রোহ করছে। এই বিদ্রোহের প্রভাব এখন স্পষ্ট। জঙ্গলের ওয়াগনার ক্যাম্পে বিমান হামলার পর বিদ্রোহীরা ক্ষিপ্ত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে যুদ্ধের প্রভাব কিয়েভের পক্ষেই ঘুরে দাঁড়াবে। জানা যাচ্ছে, রাশিয়ার আর এক শহর লিপেৎস্ক দখল করেছে বিদ্রোহী সেনা। এই শহর মস্কো থেকে মাত্র ৬ ঘণ্টা দূরে অবস্থিত। প্রায় ২০ হাজার ওয়াগনার যোদ্ধা এখন মস্কো দখলের জন্য এগোচ্ছে।
বিদ্রোহী সেনাদের ছত্রভঙ্গ করতে রুশ সেনাবাহিনীর কালঘাম ছুটছে। ক্রমাগত চপার আক্রমণ চলছে। ফলে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন অবশ্য জাতির উদ্দেশে জানিয়ে দিয়েছে, বিদ্রোহীদের উচিৎ শিক্ষা দেওয়া হবে।
এই বিদ্রোহী সেনা আসলে ভাড়াটে যোদ্ধা। রুশ ধনকুবের ব্যবসায়ী অলিগার্চ ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের ভাড়াটে সেনাবাহিনী। এই প্রিগোজিন একটা সময় পুতিন ঘনিষ্ঠ ছিলেন। মূলত ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে তার সঙ্গে পুতিনের সরকারে মন্ত্রীদের মতবিরোধ ঘটে।
এই ভাড়েটে সৈন্যের দল এতদিন ধরে রুশ সেনার সহযোগী হিসেবে কাজ করে এসেছে। অতীতে লিবিয়া, সিরিয়া, সুদানের মতো দেশগুলিতে এই ভাড়াটে সেনা গৃহযুদ্ধে লড়াই করেছে। তবে এখন তারাই রুশ সেনার বড় শত্রু। ইউক্রেনে মোতায়েন হওয়া রুশ সেনাবাহিনীকে ভয়ানক বিপদে ফেলতে পারে এই ভাড়াটে সেনার দল।