পৃথিবীতে স্বীকৃত যে দুশোর মত দেশ রয়েছেন সেই তালিকায় এখনও স্বীকৃতি পায়নি ‘প্রিন্সিপালিটি অব সিল্যান্ড’। সিল্যান্ড ইংল্যান্ডের সমুদ্রতীর থেকে ১০ কিমি দূরে অবস্থিত। একে মাইক্রো নেশন বলা হয়ে থাকে। ক্ষুদ্রতম এই দেশটির মোট আয়তন ৫৫০ স্কয়ার মিটার। ইংল্যান্ডের উত্তর সাগরে এই রাষ্ট্রটির অবস্থান। দেশটিতে ইংরেজি ভাষা প্রচলিত এবং মুদ্রার নাম সিল্যান্ড ডলার। তবে বাইরের কোনো দেশে এই মুদ্রা চলে না। এই দেশের জনসংখ্যা আরও অবাক করার মত। আমাদের দেড়শো কোটির দেশ যা জানলে হাসি পাবে। সিল্যান্ডের জন সংখ্যা মাত্র ২৭ জন।
advertisement
‘প্রিন্সিপালিটি অব সিল্যান্ড’-এর নিজস্ব পতাকা, রাজধানী, পাসপোর্ট, মুদ্রা, রাজা, রানী, জনগণ সবকিছুই রয়েছে। এটি আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি সমুদ্র বন্দর। জার্মান সেনারা যেকোনো সময় ইংল্যান্ড আক্রমণ করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ইংল্যান্ডের উপকূলভাগে সমুদ্র দূর্গ বানানোর পরিকল্পনা করেছিল। সে পরিকল্পনা থেকেই উপকূল থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে বানানো হলো মউনশেল সি ফোর্ট। সেখান থেকে শত্রু যুদ্ধ জাহাজগুলোর ওপর নজরদারি করা হতো। প্রয়োজনে শত্রু জাহাজে আক্রমণ পরিচালনার কাজও চলতো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নানা জায়গায় এমন অনেক বন্দর তৈরি করেছিল ব্রিটিশরা। বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে অন্যান্য অসংখ্য দুর্গের সঙ্গে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এটাকেও পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। ১৯৬৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ নাগরিক মেজর প্যাডাজ রায় বেটস এবং তার পরিবার এই জায়গাটির স্বত্বাধিকারী হোন। তারপর তারা এটাকে একটি স্বাধীন মাইক্রো রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে দেন। এখানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষ শাসন করেছে। ৯ অক্টোবর ২০১২ সালে রয় বেটসকে এখানে রাজা বলে ঘোষণা করা হয়। আর তার মৃত্যুর পর তার ছেলে মাইকেল এখন এর শাসক হন।
আরও পড়ুনঃ সত্যিই কি কোনও অভিশাপ! এই গ্রামের মানুষ থেকে পশু সকলেই অন্ধ
পৃথিবীর কোনো দেশ এখনও সিল্যান্ডকে স্বীকৃতি না দিলেও কেউ তাদের বিরোধিতা করেনি। তাই মাইক্রো নেশন হিসেবে বিশ্ব জুড়ে পরিচিত এই ‘প্রিন্সিপালিটি অব সিল্যান্ড’-এর। দেশটির নানা সময়ে নান ছবি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যনমে সামনে এসেছে। সিল্যান্ডের নিজস্ব রেডিও স্টেশও রয়েছে। অনেকে ঘুরতেও যান এখানে। মাত্র ২৭ জনের এই দেশ সত্যিই অবাক করার মত।