সম্প্রতি আমেরিকার দূত সের্গিও গর এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে কথা হয়৷ সেই প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভারতীয় সংবাদসংস্থা এএনআই থেকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় ওদের মধ্যে খুব ভাল কথাবার্তা হয়েছে৷ মোদি অত্যন্ত ভাল মানুষ৷ সার্গিও আমায় জানিয়েছে যে মোদি ট্রাম্পকে ভালবাসেন৷ আমি বহু বছর ধরে ভারতকে দেখে আসছি৷ অসাধারণ একটা দেশ, প্রত্যেক বছর আপনি দেখবেন একজন করে নতুন নেতা থাকে৷ কেউ কেউ তো আবার কয়েক মাসও থাকে৷ আমার বন্ধু (মোদি) বছরের পর বছর ধরে (ক্ষমতায়) রয়েছেন৷ উনি আমায় আশ্বস্ত করেছেন যে, রাশিয়ার থেকে তাঁরা আর কোনও তেল কিনবেন না৷ তবে উনি এখনই সেটা করতে পারছেন না৷’’
advertisement
ট্রাম্প জানান, ‘‘…এটা একটা লম্বা প্রসেস৷ তবে গোটা বিষয়টাই খুব শিগগির গুটিয়ে যাবে৷ আমরা শুধু চাই প্রেসিডেন্ট পুতিন এটা বন্ধকরুন৷ ইউক্রেনীয়দের মারা বন্ধ করুন, রাশিয়ানদের মারা বন্ধ করুন৷ দুই নেতার (ভলোদিমির জেনেস্কি এবং ভ্লাদিমির পুতিন) মধ্যে বিরোধ যথেষ্ট৷ আমার মনে হয় আমি ওদের থামাতে পারব৷ আর ভারত যদি রাশিয়ার থেকে তেল না কেনে, তাহলে বিষয়টা আরও সহজ হবে৷ ওরা রাশিয়ার থেকে তেল কিনবে না৷ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে ফের ওরা ব্যবসায় ফিরবে৷’’
যদিও ট্রাম্পের এই দাবি সম্পর্কে ভারতের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানাো হয়নি৷ অদ্ভুত ভাবে, ট্রাম্প এমন দাবি আগেও করেছেন, যা ভারত পরে প্রত্যাখ্যান করে৷ পরিসংখ্যানও সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (CREA) অনুসারে, সেপ্টেম্বর মাসে ভারত রাশিয়ান জীবাশ্ম জ্বালানির দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা ছিল, চিনের একদম পরেই। সেপ্টেম্বরে, রাশিয়ার থেকে ২৫,৫৯৭ কোটি টাকার তেল কিনেছে ভারত৷
ট্রাম্পের দাবির প্রেক্ষিতে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, ‘‘ভারত তেল ও গ্যাসের একটি উল্লেখযোগ্য আমদানিকারক। জ্বালানি বাজারের এই অস্থির পরিস্থিতিতে ভারতীয় গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের ধারাবাহিক অগ্রাধিকার। আমাদের আমদানি নীতিগুলি সম্পূর্ণরূপে এই উদ্দেশ্য দ্বারা পরিচালিত৷’’
ভারতের জ্বালানি নীতির দু’টি লক্ষ্য সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে বলতে গিয়ে ভারত সরকারের তরফে বলা হয়েছে যে, তাদের অগ্রাধিকার হল স্থিতিশীল জ্বালানির দাম এবং সরবরাহ নিশ্চিত করা। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “এর মধ্যে রয়েছে আমাদের জ্বালানি উৎসের বিস্তৃত ভিত্তি তৈরি করা এবং বাজারের পরিস্থিতি পূরণের জন্য যথাযথভাবে বৈচিত্র্য আনা৷”
“মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রসঙ্গে বলতে গেল, আমরা বহু বছর ধরে আমাদের জ্বালানি ক্রয় সম্প্রসারণের চেষ্টা করে আসছি। গত দশকে এটি ধারাবাহিকভাবে এগিয়েছে। বর্তমান প্রশাসন ভারতের সাথে জ্বালানি সহযোগিতা আরও গভীর করার আগ্রহ দেখিয়েছে। আলোচনা চলছে৷”
ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কেনে, এই অজুহাত দেখিয়ে ভারতীয় পণ্যের উপরে প্রথমে ৫০ শতাংশ এবং পরে আও অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ কর বসিয়েছেন ট্রাম্প৷
