শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যখন প্রথমবার মুখোমুখি হলেন, তখন আলাস্কার আকাশ গর্জে উঠেছিল দুই সেরা বোমারু বিমানের গর্জনে। দুই নেতার প্রথম ঝলক ছিল বিশেষ। লাল গালিচায় উষ্ণ করমর্দন যখন মাটিতে। আকাশে আমেরিকান বি-২ বোমারু বিমান এবং এফ-২২ র্যাপ্টরের দুর্দান্ত দাপট৷ কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে শান্তি আলোচনার আগে হঠাৎ আকাশে বোমারু বিমানের গর্জন কেন? এর পিছনে কি লুকিয়ে ছিল ট্রাম্পের প্রচ্ছন্ন কোনও বার্তা?
advertisement
পুতিন যখন রাশিয়া থেকে আলাস্কার মার্কিন সামরিক ঘাঁটির উদ্দেশে রওনা হন, তখন তিনি ভাবতেও পারেননি যে তাঁকে এত ব্যাপক অভ্যর্থনা দেওয়া হবে। ট্রাম্প তাঁকে তাঁর সেরা পোশাকে স্বাগত জানিয়েছেন। দ্য বিস্ট গাড়িতে সওয়ারও করিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য তার অনেক আগেই তাঁর এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমানে জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসনে পৌঁছে গিয়েছিলেন। বিমানের কাছেই ট্রাম্প অপেক্ষা করছিলেন পুতিনের জন্য। কয়েক মিনিট পরে, পুতিনের বিমানটি ঘাঁটিতে অবতরণ করেন। একই বিমানঘাঁটিতে আমেরিকার মারাত্মক যুদ্ধবিমানগুলি মোতায়েন করা হয়েছিল। তার মধ্যে কয়েকটিই হঠাৎ চক্কর কাটতে শুরু করল ট্রাম্প এবং পুতিনের মাথার উপরে৷
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দৃশ্য এটাই দেখে মনে হচ্ছিল যে শান্তি আলোচনাও আসলে ক্ষমতার প্রচ্ছায়ায়। এটি আপাতদৃষ্টিতে পুতিনকে অভ্যর্থনার অঙ্গ হিসাবে বিবেচিত হলেও, এর পিছনে অবশ্যই লুকিয়ে রয়েছে ট্রাম্পের শক্তি প্রদর্শনের সুপ্ত বাসনা৷
যখন দুই রাষ্ট্রনেতা লাল গালিচায় একসাথে হাঁটছিলেন, তখন আমেরিকান বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান এবং এফ-৩৫ জেট আকাশে গর্জন করছিল। লাল গালিচার উভয় পাশেই এফ-২২ যুদ্ধবিমান মোতায়েন ছিল। একদিকে, এটি ছিল রাশিয়ান রাষ্ট্রপতির জন্য স্বাগত এবং অন্যদিকে, এটি ছিল আমেরিকান শক্তির প্রদর্শন। আমেরিকান কর্মকর্তাদের মতে, এই শীর্ষ সম্মেলনের আগে, দুটি বি-২ বোমারু বিমান আলাস্কা ঘাঁটিতে আনা হয়েছিল, আর নিকবর্তী আইলসন বিমান ঘাঁটি থেকে চারটি এফ-৩৫ জেট উড়ে এসেছিল। এফ-২২ বিমানগুলি আগে থেকেই এলমেনডর্ফ ঘাঁটিতে উপস্থিত ছিল।
তবে, এই শক্তি প্রদর্শনের উড়ান ট্রাম্পের ব্যক্তিগত নির্দেশে হয়েছিল নাকি মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ কর্তৃক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে এটি অবশ্যই রাশিয়ার মতো পারমাণবিক শক্তিধর দেশের নেতার সামনে একটি শক্তিশালী বার্তা ছিল।
বি-২ বোমারু বিমান কী?
বি-২ স্পিরিট, যা সাধারণত বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান নামে পরিচিত, মার্কিন বিমান বাহিনীর অন্যতম বড় শক্তিশালী বিমান। ১৯৮৯ সালে প্রথম উড়ে আসা এই যুদ্ধবিমানটিকে এখনও বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক এবং অজেয় বোমারু বিমান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর বিশেষত্ব হল এটি অত্যন্ত সুরক্ষিত শত্রু বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গভীরে প্রবেশ করতে পারে এবং ভারী আক্রমণ চালাতে পারে। জুন মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটিতে আক্রমণ করার জন্য এই বোমারু বিমানটি ব্যবহার করে, যা সফল হয়েছিল।