প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল, ক্ষমতায় এলে আমেরিকায় বেআইনি ভাবে বসবাসকারী এবং অনুপ্রবেশকারীদের তিনি ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন৷ যে দেশগুলি প্রত্যার্পণের বিরোধিতা করবে, তাদের উপরে শুল্ক চাপানোর হুমকিও দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷
আমেরিকা থেকে সেনা বিমানে করে কলম্বিয়ার অনুপ্রবেশকারী নাগরিকদের ফেরত পাঠায় আমেরিকা৷ কিন্তু সেনা বিমানে অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত নিতে অস্বীকার করেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো৷ তিনি দাবি করেন, অসামরিক বিমানে করেই অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠাতে হবে৷ যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক চাপানোর হুমকি দেওয়ার পর অবশ্য সেনা বিমানেই অনুপ্রবেশকারীদের প্রত্যর্পণ মেনে নেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট৷
advertisement
আরও পড়ুন: হাতকড়া পরানো, পায়ে বেড়ি! ২০৫ জন ভারতীয়কে নিয়ে অমৃতসরে পৌঁছল মার্কিন সেনার বিমান
সেনা বিমানে কেন অনুপ্রবেশকারীদের ফেরাচ্ছে আমেরিকা, খরচ কত?
শপথ নেওয়ার পর গত ২০ জানুয়ারি একটি নির্দেশনামায় সই করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ মার্কিন সেনাকে সীমান্ত নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশ দেন তিনি৷ সেই সময় মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জানিয়েছিলেন, প্রায় পাঁচ হাজার অনুপ্রবেশকারীকে দেশে ফেরাতে বিমান দিয়ে সাহায্য করবে মার্কিন সেনাবাহিনী৷ আমেরিকার দক্ষিণ প্রান্তের সীমান্ত এলাকা থেকে এই অনুপ্রবেশকারীদের আটক করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তৎকালীন প্রতিরক্ষা সচিব৷ সংশ্লিষ্ট প্রতিটি দেশকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করার পর এবং প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক ছাড়পত্র পাওয়ার পরই অনুপ্রবেশকারীদের ফেরাবনো হবে বলে জানানো হয়৷ তবে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে আমেরিকা কতটা কঠোর অবস্থান নিয়েছে, তা বোঝাতেই ইচ্ছাকৃত ভাবে সাধারণ বিমানের বদলে সেনা বিমানে করে বিভিন্ন দেশে অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের৷
হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব একটি বিবৃতিতে জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গোটা বিশ্বে স্পষ্ট বার্তা পাঠাচ্ছেন, বেআইনি ভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করলে তার চরম পরিণতি ভুগতে হবে৷
এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে অনুপ্রবেশকারীদের ফেরাতে ৬টি মার্কিন সেনা বিমান ব্যবহার করা হয়েছে৷ এর পাশাপাশি অসামরিক বিমানেও অনুপ্রবেশকারীদের গুয়েতেমালা, মেক্সিকো, কলম্বিয়া, হন্ডুরাসের মতো দেশে ফেরানো হয়েছে৷
তবে অসামরিক বিমানের তুলনায় সেনা বিমানে অনুপ্রবেশকারী প্রত্যর্পণের খরচও অনেকটাই বেশি বলে জানা গিয়েছে৷ রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুয়েতেমালায় একজন অনুপ্রবেশকারীকে ফেরত পাঠাতে আমেরিকার অন্তত ৪৬৭৫ ডলার খরচ হবে৷ সেখানে আমেরিকা থেকে গুয়েতেমালা যাওয়ার একদিকের প্রথমশ্রেণির বিমান ভাড়া পড়ে ৮৫৩ ডলার মতো৷
যেভাবে আমেরিকা অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠাচ্ছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই উষ্মা প্রকাশ করেছে একাধিক দেশ৷ মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাম স্পষ্ট জানিয়েছেন, নিজেদের সার্বভৌমত্ব তাঁরা রক্ষা করবেন৷ অনুপ্রবেশকারীদের প্রত্যর্পণ নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনাও চান তিনি৷ হাতকড়া, পায়ে বেড়ি পরিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের যেভাবে সেনা বিমানে ফেরত পাঠানো হচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে লাতিন আমেরিকার অন্যান্য একাধিক দেশ৷