আদা রঙের খয়েরি পশমে ঢাকা, নীল চোখের একটি বিরল আলবিনো সীল দেখা গেল সাইবেরিয়ার ওখোতস্ক সমুদ্রে। এই প্রাণীটিকে খুব সহজেই অন্য সীলদের মধ্যে আলাদা করা যাচ্ছে। এই সীলটি অন্যদের চেয়ে এতটাই অন্যরকম দেখতে যে নিজের সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার হওয়ারও ঝুঁকি রয়েছে তার।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এমন দেখতে সীল লক্ষের মধ্যে একটা জন্মায়। গবেষকরা এই কথাটি মাথায় রেখে তার নাম দিয়েছেন 'আগলি ডাকলিং'। এই সদ্যজাত সীলটির ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে শেয়ার করেন রাশিয়ান সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী ভ্লাদিমির বুরকানভ।
advertisement
যেই পিগমেন্টেশন থেকে সীলরা নিজেদের কালো রঙ পায়, তারই অভাব এই বাচ্চাটির মধ্যে। এর কারনে এই সদ্যজাতকে অনায়াসেই সবার থেকে আলাদা করা যায়। ইন্টারনেটে মানুষদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় হওয়া সত্বেও এটি তার সমকক্ষদের মধ্যে খুবই একা। অন্য সীলরা এই বাচ্চাটিকে নিজেদের সম্প্রদায় থেকে আলাদা করে দেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গবেষকরা৷
বুরকানভ জানিয়েছেন, সীলটিকে দেখে সুস্থ লাগলেও, এই সম্প্রদায়ের অন্য সদস্যরা তাকে স্বাগত জানাতে নারাজ। এই সীলটির প্রতি অন্যদের কটাক্ষ উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। তার বিশ্বাস অন্য সীলেরা এই বাচ্চাটির উপর এখন পর্যন্ত কোনোরকম শারীরিক আঘাত হানেনি। সবার সঙ্গে মানিয়ে নিতে এবং নিজের বসতি স্থাপন করতে যদি এই সীলটিকে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়, তবে তাকে নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা নেবেন বন্যপ্রানী বিশেষজ্ঞরা। সীলটির নিরাপত্তার জন্যেই তাকে একটি ডলফিনেরিয়ামের তত্বাবধানে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
আলবিনো সীলদের মধ্যে দৃষ্টিশক্তির খামতির কথা আমাদের সবার জানা আছে। সুস্থ ভাবে বেড়ে ওঠা এবং বংশবৃদ্ধির সম্ভাবনা এদের মধ্যে অত্যন্ত কম। এই সকল অপূর্ণতা এই জাতীয় সীলদের বিরলতম হওয়ার জন্যে দায়ী। এক দশক আগে একই দ্বীপে এরকমই এক সীলের জন্ম হয়েছিল বলে জানা যায়। তাকেও সীল সম্প্রদায়ের অন্যরা স্বীকার করতে রাজি হয়নি বলে জানা গেছে। তাকে ওখানে একা ফেলে রাখলে তার মৃত্যু ছিল অবধারিত।
সৌভাগ্যবশত, বন্যজীব বিশেষজ্ঞরা তাকে উদ্ধার করে রাশিয়ার ব্ল্যাক সমুদ্র উপকূলের এক অ্যাকোয়ারিয়াম রেখে আসেন তারা। পরে অফলাইন এবং অনলাইন দর্শকদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই সীল। এরকমই এক ঘটনা আবার ঘটে যেতেই পারে আমাদের সামনে। আশা করি এই আলবিনো শিশুটি নিজের জীবনে বন্ধুত্ব ও আনন্দ খুঁজে পাক।