কিন্তু সোমবার সেই সমস্ত আশাই মিথ্যে হয়ে গেল৷ নেপালের নাগরিক ২৩ বছর বয়সি পড়ুয়া বিপিন যোশি যে আর তাঁর পরিবারের কাছে ফিরবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে গেল সবাই৷ কারণ ইজরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তির শর্ত মেনে তাঁদের কব্জায় থাকা যে বন্দিদের হামাস জঙ্গি গোষ্ঠী মুক্তি দিয়েছে, তাঁদের মধ্যে বিপিন ছিলেন না৷ আবার হামাস দাবি করেছে, তাঁদের কাছে আর কোনও জীবিত বন্দি নেই৷ ফলে ধরেই নেওয়া হচ্ছে, হামাসের হেফাজতে থাকাকালীনই মৃত্যু হয়েছে বিপিনের৷
advertisement
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ইজরায়েলে হামলা চালিয়ে বহু সাধারণ মানুষকে বন্দি করেছিল জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস৷ সেই বন্দিদের মধ্যে ছিলেন ২৩ বছর বয়সি বিপিনও৷ নেপালের নাগরিক বিপিন ওই ঘটনার মাত্র তিন সপ্তাহ আগে ইজরায়েলে পৌঁছেছিলেন৷ আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ নিতে আরও ১৬ জন নেপালি পড়ুয়ার সঙ্গে ইজরায়েলের কিববাৎজ আলুমিম-এ পৌঁছেছিলেন বিপিন৷ যে এলাকায় বিপিনরা ছিলেন, সেটি গাজা সীমান্তের একেবারে কাছে৷ সেখান থেকেই বিপিনকে অপহরণ করা হয়৷
ঘটনার দিন সকালের হামলায় বিপিনের দশজন সঙ্গীর মৃত্যু হয়৷ প্রাণে বাঁচতে থাইল্যান্ডের কয়েকজন নাগরিকের সঙ্গে একটি জায়গায় আশ্রয় নেন বিপিনরা৷
ওই হামলায় জীবিত একমাত্র নেপালি নাগরিক হিমাঞ্চল কাট্টেলের কথায়, তাঁরা যেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখানে একটি গ্রেনেড ছোড়ে হামলাকারীরা৷ কিন্তু বিপিন প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেই গ্রেনেড বাইরে ছুড়ে ফেলে দেন৷ ফলে প্রাণ বাঁচে হিমাঞ্চলের৷
যদিও হামলায় আহত হন বিপিন৷ ওই অবস্থাতেই থাইল্যান্ডের দু জন নাগরিকের সঙ্গে বিপিনকেও অপহরণ করে হামাস জঙ্গিরা৷ শেষ ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল, বিপিনদের নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে গাজার দিকে যাচ্ছে হামলাকারীদের দল৷ যে জায়গা থেকে বিপিনকে বন্দি করা হয়, পরবর্তী সময়ে সেখানে বিপিনের সাহসিকতাকে সম্মান জানিয়ে নেপালের একটি পতাকা লাগিয়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ বিপিনের মুক্তির দাবি জানাতে ইজরায়েলেও যায় ওই ছাত্রের পরিবার৷ ইজরায়েলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও দেখা করেন তাঁরা৷
বিপিন বেঁচে আছেন বলে সাময়িক ভাবে আশাও জেগেছিল৷ কারণ কিছুদিন আগে সামনে আসা একটি ভিডিওতে হামাসের ডেরায় জীবিত অবস্থাতেই দেখা গিয়েছিল বিপিনকে৷ ফলে নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছিল তাঁর পরিবার৷ কিন্তু পরে জানা যায়, ওই ভিডিওটি ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের৷ এর পরে আর বিপিন সম্পর্কে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি৷
সোমবার শান্তি চুক্তি মেনে মোট ২০ জন বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস৷ বন্দিদের ফেরত পাওয়ার পর ইজরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জীবিত বন্দিদের মধ্যে বিপিন যোশি নেই৷ তাঁর দেহ ফিরিয়ে দিয়েছে হামাস৷ বিপিন সহ মোট চারজন বন্দির মৃতদেহ ইজরায়েলকে ফেরায় হামাস৷ তাঁদের মধ্যে বিপিনই একমাত্র বিদেশি৷