পরিবারের সদস্যদরা জানালেন, ওপার বাংলায় শুরু হওয়া এই পুজো এপার বাংলায় আসে পূর্ব পুরুষদের হাত ধরে। কালনায় প্রথমবস্থায় এই পুজো কষ্ট করেই করা হত। তখন পারিবারিক আয় বিশেষ ছিল না। পরে অবশ্য পুজোর জৌলুস বাড়ে। প্রাচীন রীতিনীতি নিয়ম-কানুন মেনে সেনগুপ্ত পরিবারে ধারাবাহিকভাবে পুজো চলে আসছে।
এই পরিবারের পূর্ব পুরুষ জীতেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত দেশভাগের আগেই এপার বাংলার এসে কালনায় বসবাস শুরু করেন। ওপার বাংলার ফরিদপুরের পশ্চিম পিঞ্জিরী গ্রামের বাড়িতে ছিল পূর্ব পুরুষদের কয়েক শো বছরের প্রাচীন দুর্গাপুজো। সেই পুজো বন্ধ রাখতে পারেননি। তাই কালনা থেকে ওখানে গিয়েই সেই পুজো করতে হত। যাতায়াতের অসুবিধা ও টানাপোড়েন ছিলই। তাই পুজোয় আর ওপার বাংলায় না গিয়ে কালনার শ্যামগঞ্জপাড়ায় ১৯৫২ সালে এই দুর্গাপুজো শুরু করেন জীতেন্দ্রনাথবাবু।
advertisement
পরিবারের সদস্য বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, '' কয়েক শো বছরের প্রাচীন এই দুর্গাপুজোর সূচনা হয় বাংলাদেশের ফরিদপুরের পশ্চিম পিঞ্জিরী গ্রামে।আনুমানিক ৫৮৫ বঙ্গাব্দে তা শুরু করেন রত্নাকর সেনগুপ্ত ও প্রিয়ঙ্কর সেনগুপ্ত নামে দুই ভাই। পরে এই পুজো কালনায় নিয়ে এসে তা শুরু করেন আমাদের পূর্বপুরুষ জীতেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত। আর্থিক টানাটানির মধ্যে প্রথমে তাঁবু খাটিয়ে ও মাটির ঘরে পুজো করা হলেও এই পুজো কোনও দিনই বন্ধ করা হয়নি। বর্তমানে এক চালার নজরকাড়া দেবী প্রতিমার পুজো হয় পরিবারেরই প্রতিষ্ঠিত মন্দিরে। রুপোর মুকুট ও গহনা দিয়ে সাজানো হয় দেবীকে। এছাড়াও এই পরিবারের পুজোয় একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, দেবীর বাঁ হাতে পুজোর কয়েকটা দিন ১০৮ টি করে দুর্বা ঘাস বেঁধে দেওয়া হয়।এখানে অন্ন হিসাবে চিঁড়ে,নারকেল ও পরমান্ন হিসাবে গুড়,খই ছাড়াও প্রতিদিন লুচি,মিষ্টি,গুড় ও চিনির নাড়ু নিবেদন করা হয়।বিজয়া দশমীর দিন দেবীকে পান্তা ভাত ও কচুশাক নিবেদন করা হয়।''