প্রায় সারা রাত ধরে বৈঠক হওয়ার পরেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ওই বৈঠকে ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, “গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় যাঁদের পণবন্দি করা হয়েছিল, তাঁদের মুক্তির জন্য মন্ত্রিসভা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা বেশ কঠিনই ছিল। কিন্তু এটা একেবারেই সঠিক সিদ্ধান্ত।”
অফিশিয়াল বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, সমস্ত অপহৃত বা পণবন্দিদের নিরাপদে ঘরে ফেরাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইজরায়েলি সরকার। আজ রাতে সেই লক্ষ্য পূরণের প্রথম ধাপের রূপরেখাই অনুমোদিত হল। যার আওতায় মহিলা এবং শিশু-সহ প্রায় ৫০ জন অপহৃতকে চারদিনের মধ্যে মুক্ত করা হবে। আর সেই সময়টায় যুদ্ধবিরতি থাকবে। ওই বিবৃতিতে আরও সংযোজন, প্রতি দশ জন অতিরিক্ত অপহৃতের মুক্তির ফলে একটি অতিরিক্ত দিন অবকাশ পাওয়া যাবে।
advertisement
ইজরায়েল অনুমোদিত এই মানবিক যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে হামাসও। এর অংশ হিসেবে গাজায় হামাসের পণবন্দিদের মুক্ত করার বিনিময়ে প্যালেস্তাইনি বন্দিদেরও ছেড়ে দেওয়া হবে। এমনটাই জানানো হয়েছে ওই গোষ্ঠীর তরফে। তবে হামাসের ওই বিবৃতিতে উল্লেখযোগ্য ভাবে প্যালেস্তাইনি বন্দিদের মুক্তি এবং গাজায় অতিরিক্ত জ্বালানি ও সাহায্যের প্রবেশ-সহ ইজরায়েলের সম্ভাব্য ছাড়ের বিষয়ে বিশদ বিবরণ ছিল না। এই চুক্তিতে ভোটের আগে নেতানিয়াহু তাঁর মন্ত্রিসভায় মঙ্গলবার জানান, “যে পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে, তা উন্নত করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাহায্য করেছেন।”
আরও পড়ুন : কমবে ডায়াবেটিস, ঝরবে ওজন! শুধু ১ বাটি মুগডাল খান এভাবে
পণবন্দিদের পরিবারও দাবি জানায় যে, পণবন্দিদের ফিরিয়ে আনার জন্য জোর আরও দেওয়া উচিত ইসরায়েলের। যদিও নেতানিয়াহুর জোট সরকারের অংশ ধর্মীয় জায়োনিস্ট পার্টি এই চুক্তির বিরোধিতা করেছে, এটিকে ইসরায়েলের নিরাপত্তা, পণবন্দি এবং সেনাবাহিনীর জন্য খারাপ বলে নিন্দা করেছে। নেতানিয়াহুর দফতরের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে যে, “গতকাল সন্ধ্যায় আমি ওয়ার ক্যাবিনেটের সদস্যদের নিয়ে পণবন্দিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছি। আমি তাঁদের দুর্দশার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। চোখের জলে তাঁরা নিজেদের দুঃস্বপ্নের বর্ণনা দিয়েছেন।”
বেশ কিছু সংবাদ সংস্থার দাবি, এই অস্থায়ী চুক্তির আওতায় থাকবে পাঁচ দিনব্যাপী যুদ্ধবিরতি। এর মধ্যে স্থলভাগে সম্পূর্ণ সংঘর্ষবিরতি এবং গাজায় আকাশপথে ইজরায়েলি হামলাও বন্ধ থাকবে। তবে উত্তরাংশে প্রতিদিন শুধুমাত্র ৬ ঘণ্টা মতো বিরতি থাকবে। এই চুক্তির অধীনে ৫০-১০০ জন ইজরায়েলিকে মুক্তি দেওয়া হবে। তার বিনিময়ে বর্তমানে ইজরায়েলের কারাগারে আটকে থাকা প্রায় ৩০০ জন মহিলা এবং পুরুষবন্দিকে ছেড়ে দেওয়া হবে। নেতানিয়াহুর বক্তব্য, “এতে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আইডিএফ-এর সুবিধা হবে। আসলে যুদ্ধ চলবেই। যতক্ষণ না আমরা আমাদের সমস্ত লক্ষ্য পূরণ করতে পারছি। হামাসকে ধ্বংস করে সমস্ত পণবন্দিকে ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”
