নিজামউদ্দিনের বাবা মহম্মদ হাসনুদ্দিন জানিয়েছেন, চলতি মাসের শুরুর দিকেই তাঁকে গুলি করা হয়েছিল৷ কিন্তু, তাঁকে জানানো হয়েছে গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর৷ গত ৩ সেপ্টেম্বর রুমমেটের সাথে ঝগড়া হয়েছিল৷ তারপরেই আমেরিকার পুলিশ গুলি করে তাঁকে৷ কিন্তু, কী কারণে কোন পরিস্থিতিতে গুলি চলেছিল, তা জানতে পারা যায়নি এখনও৷
এর মধ্যেই সামনে এসেছে নিহত নিজামউদ্দিনের একটি লিঙ্কড-ইন পোস্ট৷ ফ্লোরিডার কলেজ থেকে পাশ করার পরে নিজামউদ্দিন EPAM Systems-এ মাধ্যমে গুগলে চাকরি করত৷ কিন্তু, তার সেই চাকরি চলে যায়৷
advertisement
পরিবার সূত্রের খবর, নিজামউদ্দিন বরকাবরই শান্ত, ধার্মিক ছিল৷ কিন্তু আমেরিকায় বারবার তাঁকে বর্ণবিদ্বেষের শিকার হতে হয়েছে৷ কখনও কাজ করে কম টাকা দিয়েছে, কখনও অন্যায় ভাবে কাজ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে এবং বিচারপ্রক্রিয়ায় দেরি৷
নিজামউদ্দিন লিখেছিল, ‘‘আমি ঠিক করেছি, আমি বলবই৷ অনেক হয়েছে, আর নয়৷ হোয়াইট সুপ্রিমেসিস রেসিস্ট আমেরিকান মনোভাবের শেষ হওয়া দরকার৷ কর্পোরেটে এই অত্যাচার শেষ হওয়া দরকার৷ এর সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁদের সকলের শাস্তি হওয়া দরকার৷ ’’
এক বিবৃতিতে, সান্তা ক্লারা পুলিশ বিভাগ (এসসিপিডি) জানিয়েছে, তারা ৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় সকাল ৬.০৮ টার দিকে ৯১১ নম্বরে একটি ফোন পায়৷ যেখানে একটি বাসভবনের ভিতরে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে বলেতাঁরা জানতে পারেন।
“এসসিপিডি অফিসাররা এসে সন্দেহভাজন ব্যক্তির মুখোমুখি হন এবং সেখানে থাকা পুলিশ আধিকারিক গুলি চালান। সন্দেহভাজন ব্যক্তি আহত হন৷ তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে পরে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার চিকিৎসা চলছে। অফিসার আহত হননি,” পুলিশ বিভাগের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা বিবৃতিতে বলা হয়।
পুলিশ প্রধান কোরি মরগানের মতে, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই দুই রুমমেটের মধ্যে ঝগড়া হিংসাত্মক হয়ে ওঠে৷ যেখানে তারা দেখতে পায় যে ভিকটিম তার রুমমেটকে চেপে ধরে রেখেছে, তার বেশ কয়েকটি আঘাত লেগেছে। পরে পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে দুটি ছুরি উদ্ধার করেন।
নিজামুদ্দিনের এক আত্মীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন যে, নিজামুদ্দিন এবং তার রুমমেটের মধ্যে ঝগড়া হওয়ার পর, একজন প্রতিবেশী পুলিশকে ফোন করেছিলেন। পরিস্থিতি হিংসাত্মক হয়ে ওঠে এবং ঝগড়ায় ছুরি চলে আসে।
নিজামউদ্দিনের বাবা দাবি করেছেন, তিনি জানতে পেরেছিলেন যে তার ছেলের তার রুমমেটের সাথে “ছোটখাটো বিষয়” নিয়ে ঝগড়া হয়েছে। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ঘটনাটি সম্পর্কে তথ্য পেয়েছেন এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে তার ছেলের মৃতদেহ মাহবুবনগরে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করেছেন।