ময়মনসিংহ: বাংলাদেশে ময়মনসিংহ শিশু অ্যাকাডেমি হিসেবে ব্যবহার করা হত হরিকিশোর রায় রোডের প্রাচীন একটি বাড়ি। বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের। সম্প্রতি বাংলাদেশের শিশু অ্যাকাডেমি বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু হলে সমালোচনা শুরু হয়। এরপর আজ বুধবার স্থাপনাটি ভাঙার কাজ বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ।
advertisement
ময়মনসিংহে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল ভারত। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়, বাড়িটি সংস্কার ও পুনর্নির্মাণে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক নয়াদিল্লি।
মঙ্গলবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি যে বাংলাদেশের ময়মনসিংহে অবস্থিত প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের বাড়িটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। বাড়িটি তাঁর দাদা বিশিষ্ট সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর ছিল।’
এদিকে, প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের শশীলজ জাদুঘরের মাঠ কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন বাড়িটি ভাঙার ব্যাপারে তথ্য চেয়ে গত সোমবার জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন। তখন সাবিনা ইয়াসমিন বলেছিলেন, এটি রায় পরিবারের ঐতিহাসিক বাড়ি। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত না হলেও সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের বাড়ি হিসেবে সেটি শতবর্ষ প্রাচীন। এই স্থাপনা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারে।
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ইতিমধ্যে বাড়িটির এক-তৃতীয়াংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। সংরক্ষণের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বাড়িটি রায় পরিবারের হিসেবেই পেয়েছেন। কিন্তু অনেকে বলছেন, সেটি অন্য কারও বাড়ি। আজ সকাল থেকে বাড়িটি ভাঙার কাজ বন্ধ আছে।
বাড়ি ভাঙার খবর প্রকাশের পর মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভারত সরকারের পক্ষে বিবৃতি দেওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়। মঙ্গলবার রাতেই জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বাড়িটি পরিদর্শন করেন। বাড়িটির মালিকানা নিয়ে জটিলতার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। এরপরই বাড়ি ভাঙার কাজ বন্ধ রাখা হয় বলে খবর।