৬ ও ৭ নভেম্বর ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ শান্তি আলোচনা কোনও লিখিত প্রতিশ্রুতি আনতে ব্যর্থ হয়—যেখানে পাকিস্তান চেয়েছিল, কাবুল সরকার যেন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-র জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, যারা পাকিস্তানে হামলার জন্য আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ।
আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর আফগান গোত্র, সীমান্ত ও উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রী নূরুল্লাহ নূরী পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ যেন নিজের দেশের প্রযুক্তি নিয়ে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী না হন—তাঁকে উচিত হবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পরিণতি থেকে শিক্ষা নেওয়া, যাদের আফগানিস্তান আক্রমণ শেষ হয়েছিল পরাজয়ের মধ্য দিয়ে।
advertisement
‘প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছিল, রাগে কামড়ে দিলাম’…উত্তরপ্রদেশে কালো গোখরো সাপের ছোবল খেয়ে পাল্টা কৃষকেরও!
তিনি আরও বলেন, “যদি যুদ্ধ বাধে, আফগানিস্তানের প্রবীণ ও তরুণ—দু’পক্ষই অস্ত্র তুলে নেবে।” একই সঙ্গে পাকিস্তানকে উদ্দেশ করে জানান, সিন্ধ ও পাঞ্জাবও খুব দূরে নয়—অর্থাৎ, সংঘাত শুরু হলে তা সীমান্ত পেরোতে সময় লাগবে না।
এর আগে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ সতর্ক করেছিলেন, ইস্তানবুলের আলোচনা ব্যর্থ হলে ইসলামাবাদ সরাসরি সংঘর্ষে যেতে বাধ্য হবে।
তালিবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ অভিযোগ করেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কিছু গোষ্ঠী আফগানিস্তানে একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার থাকা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। তাঁরা আফগানিস্তানের নিরাপত্তা, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা মেনে নিতে পারছেন না।
মুজাহিদ বলেন, “এই গোষ্ঠীগুলি ঐতিহাসিকভাবে আফগানিস্তানের অস্থিতিশীলতা, দখল, অভিবাসন ও সংকট থেকে লাভবান হয়েছে। এখন তারা নতুন অজুহাত তৈরি করে আবারও সংঘাতে ফিরতে চাইছে।”
তাঁর মতে, টিটিপি-র জন্ম ২০০২ সালে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কিছু বিভ্রান্তিকর নীতির ফলেই—যারা তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওয়াজিরিস্তানে ড্রোন হামলার অনুমতি দিয়েছিল এবং নিজের জনগণের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছিল।
মুজাহিদ আরও জানান, ইসলামিক এমিরেট অব আফগানিস্তান পাকিস্তান সরকার ও টিটিপি-র মধ্যে সরাসরি আলোচনার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছিল, যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান সেনার কিছু অংশ ইচ্ছাকৃতভাবে সেই প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করেছে।
তিনি বলেন, “ইসলামিক এমিরেট সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—এর ভূখণ্ড কখনও অন্য দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য ব্যবহার হতে দেওয়া হবে না। এ ধরনের কর্মকাণ্ড ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
কাবুলের পাল্টা অভিযোগ: পাকিস্তানের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ভূমিকা
এই আলোচনার পরপরই আফগানিস্তান অভিযোগ তোলে যে, পাকিস্তান ইস্তানবুল বৈঠকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসহযোগী’ মনোভাব দেখিয়েছে। কাবুল সরকারের বক্তব্য, ইসলামাবাদ নিজের নিরাপত্তার সমস্ত দায় কাবুলের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে, অথচ নিজে কোনও দায়িত্ব নিতে রাজি হয়নি।
