গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ফলে দিনকে দিন বেড়ে চলেছে সমুদ্রের উপরিভাগের জলের তাপমাত্রা। যে পরিমাণ কার্বন তারা টেনে নিত, তা হ্রাস পাওয়াতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে বৈজ্ঞানিকদের অভিমত। সোমবার প্রকাশ পাওয়া গবেষণায় পরিবেশ বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই পরিস্থিতিকে বিপজ্জনক বলে আখ্যা দিয়েছেন।
পরিবেশের উপর মানুষের অত্যাচার এবং তার ফলে পৃথিবীর স্বাভাবিক আবহাওয়া দিনকে দিন বদলে চলেছে। পৃথিবীর উপরিভাগের তাপমাত্রা মানুষঘটিত কারণে বেড়ে যাওয়ায়, বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন ঘন ঘন তীব্র ঝড়ের সম্মুখীন হচ্ছে মানবসভ্যতা। আবহাওয়াগত বদলের কারণে সমুদ্রের অগভীর অঞ্চলের জল অক্সিজেনসহ উঠে আসছে সমুদ্রের উপরের অঞ্চলে আর সমুদ্রের উপরিভাগের জল কম পরিমাণে কার্বণ ডাই অক্সাইড শোষণ করে চলে যাচ্ছে নিচের দিকে।
advertisement
নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ নামের জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টে ইন্টারন্যাশনাল টিম অফ ক্লাইমেট সায়েন্টিস্টস-এর বৈজ্ঞানিকরা জানিয়েছেন, ১৯৬০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পৃথিবী জুড়ে সমুদ্রের স্তরবিন্যাস ৫.৩% বৃদ্ধি পেয়েছে। উষ্ণতা বাড়ার জন্য, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমুদ্রের উপরিভাগের জলের তাপমাত্রাই বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সমুদ্রের বরফ গলছে। তার ফলে বেড়ে চলেছে টাটকা জলের পরিমাণ। সমুদ্রের নোনতা জলের থেকে এই বরফগলা জল বেশি হালকা হওয়ায় সমুদ্রের উপরিভাগে এর জায়গা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিকদের মতে এই সমুদ্রের ওপরের জল গরম হয়ে ওঠার ফলে হ্যারিকেনের মতন সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের রোষে পড়ছে মানবসভ্যতা। সমুদ্রের ওপরের গরম জল বেশি পরিমাণে অক্সিজেন না পাওয়ায় বিপদের মুখে পড়তে চলেছে সামুদ্রিক প্রাণীরাও। গবেষণা অনুযায়ী ক্লাইমেট চেঞ্জের ফলে সামুদ্রিক প্রাণীদের অনেকাংশ এই শতকের শেষে নিশ্চিন্হ হয়ে যেতে পারে। সমুদ্রের জল যে রকম ভাবে দিনের পর দিন গরম হয়ে উঠছে তার ফলে হিমবাহ ছাড়াও সমুদ্রে থাকা লাক্ষাপ্রাচীরগুলোও ক্ষতির মুখে পড়বে বলে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা।