প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য এভারেস্ট বেসক্যাম্পে ১৮ দিন অপেক্ষা করতে হয় হরি এবং তাঁর সঙ্গীদের। তার পরও বন্ধুর আবহাওয়ার মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে। তাঁদের সামনে দিয়েই নামিয়ে আনা হয় দু’টি নিথর দেহ। তার পরও নিরাশ হননি হরি। বরং নতুন করে সাহস সঞ্চয় করে এগিয়ে গিয়েছেন অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে।
advertisement
১৯ বছর বয়স পর্যন্ত হরি কাটিয়েছেন নেপালের এক পাহাড়ি গ্রামে। সেখানে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে বলা হত গত জন্মের পাপের ফল। শৈশবে খালি পায়ে স্কুলে যাওয়ার পথেই মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখতেন হরি।
শৈশবের স্বপ্ন নতুন করে ফিরে এল ২০১৮ সালে। তত দিনে তিনি আফগানিস্তানের যুদ্ধক্ষেত্রে হারিয়েছেন পা। একইসঙ্গে শারীরিক ও মানসিক আঘাতের পর তাঁকে গ্রাস করেছিল চূড়ান্ত অবসাদ। সুরার নেশার শিকার হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
বলা যায়, মাউন্ট এভারেস্টের প্রতি আকর্ষণই তাঁকে অবসাদ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। কিন্তু এভারেস্টের পথে প্রাকৃতিক বাধা ছাড়াও ছিল আইনি জটিলতা। ২০১৭ সালে চালু হওয়া ওই আইনে বলা হয়, দৃষ্টিশক্তিহীন এবং দু’টি পা নেই এমন কেউ বা একা কোনও অভিযাত্রী পর্বতারোহণ করতে পারবেন না। সেই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে পাল্টা আবেদন জানান হরি ও অন্যান্যরা। ২০১৮ সালে আইনটি বাতিল বলে ঘোষিত হয়। এর পর নতুন উদ্যমে অভিযানে শামিল হন হরি। অবশেষে বিশ্বের উচ্চতম বিন্দুজয় এই অভিযাত্রীর।
এ বার তিনি নিজের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চান। আর এক বার ফিরতে চান আফগানিস্তানের সেই অতীতের রণভূমিতে। গিয়ে ধন্যবাদ জানাতে চান। কারণ তাঁর বিশ্বাস পা দু’টো না হারালে তিনি মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে পারতেন না। তাই বিশ্বাস করেন, ‘যা হয়েছে, ভালর জন্যই হয়েছে।’