কিন্তু মানুষের বাচ্চাকে ইট-কাঠের জঙ্গলে সেই জায়গা করে দেওয়ার জন্য আসল জঙ্গল থেকে ধরে নিয়ে আসা নেকড়েদের শ্বাসরোধ করার বন্দোবস্ত করতে হবে- এই বা কেমন কথা! কিন্তু কার্যত সেটাই করে দেখালেন ডেনমার্কের কোপেনহেগেন চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ।
ডেইলি মেল-এ প্রকাশিত এই প্রতিবেদন মাফিক এই পশুমেধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। তাঁদের দেওয়া তথ্য বলছে যে সেই ১৯৮০ সাল থেকে এই তিন নেকড়ে কোপেনহেগেন চিড়িয়াখানায় ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের মনে হয়েছে যে বাচ্চাদের জন্য একটা পাকাপাকি খেলার জায়গা বানিয়ে দিলে উপার্জন আরও বেশি হবে। তাই এই চার নেকড়ে যে জায়গায় থাকত, সেটা খালি করার জন্য মেরে ফেলা হয়েছে ওদের। এখন ওখানে পার্ক বানানো হবে। ভবিষ্যতে সেই পার্ককে হাতি আর হরিণের চারণভূমির সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে কোপেনহেগেন চিড়িয়াখানা।
advertisement
ওই তিন পুরুষ নেকড়েকে স্থানান্তরিত করার জন্য আর কোনও জায়গা ছিল না! তাই এক রকম বাধ্য হয়েই এই পথ বেছে নিতে হয়েছে, আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
তা বলে এটা ভাবা ভুল যে কোপেনহেগেন চিড়িয়াখানায় পশুমেধের ঘটনা এই প্রথম ঘটল! এর আগে কার্ট নামে এক জলহস্তী প্রাণ দিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের হাতে। তবে কার্টের ব্যাপার ছিল একটু আলাদা। ২০১৯ সালে সুপারফিসিয়াল নেকটোলাইটিক ডার্মাটাইটিস নামে এক ত্বকের অলুখে আক্রান্ত হয় সে, সারা শরীরে, মুখের ভিতরে এবং নাকের ফুটোতেও ছড়িয়ে পড়ে আলসার। স্বাভাবিক ভাবেই খেতে পারত না কার্ট, মাত্র ৩ সপ্তাহেই ঝরে গিয়েছিল ৮৮০ এলবিএস ওজন! অতএব তাকে রোগযন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়াটা মার্সি কিলিং হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
কিন্তু নেকড়েদের ঘটনাটা তা নয়। ঠিক যেমন এর আগে বেশি জনপ্রিয় পোলার বিয়ার আনার জন্য ব্রাউন বিয়ারদের মেরে ফেলেছিল কোপেনহেগেন চিড়িয়াখানা বা ২০১৪ সালে প্রজননে বৈচিত্র্যের অভাবের জন্য মেরে ফেলেছিল এক জিরাফকে, এও তাই!
দেখা যাক, পশুপ্রেমী সংগঠনগুলো এই হত্যামিছিল রোধ করার মর্মে কোনও পদক্ষেপ করে কি না!