চলতি বছর মে মাস থেকে ৩৭ বছরের চিনা সাংবাদিক ঝ্যাং ঝ্যানকে চিনের প্রশাসন আটকে রেখেছিল। আজ, সোমবার সংক্ষিপ্ত শুনানির পরে তাঁকে ৪ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ঝ্যানের বর্তমান আইনজীবী রেন কুয়ানিউ জানিয়েছেন, "ঝ্যাং যে কারণে সাজা পেয়েছেন তা চিনের মতে দণ্ডনীয় অপরাধ। চিনের সরকার তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছে এবং সাধারণত মানবাধিকার কর্মীদের মুখ বন্ধ করার জন্য চিনের সরকার এই ধরণের পদক্ষেপ নেয়"।
advertisement
নভেম্বরে করোনার সংক্রমণ চিনে ছড়িয়ে পড়লে তার ভিডিও বানিয়ে ঝ্যান সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং বিভিন্ন চিনা অ্যাপে প্রকাশ করে। তাঁর দাবি ছিল, অজানা নতুন এই ভাইরাস নিয়ে চিন সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। তাঁর এই দাবিতে চিনের সরকার অসন্তুষ্ট হয় এবং তাঁকে আটকে রাখে প্রশাসন। যাতে সরকারের ভাবমূর্তি কোনও ভাবে নষ্ট না হয়। সরকারের বিপক্ষে গিয়ে কাজ করার জন্য ঝ্যানকে অনেক রোষের মুখে পড়তে হয়েছে।
সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জনাতে জুন মাস থেকে ঝ্যান অনশন শুরু করেন। কিন্তু তাঁর স্বাস্থ্য খারাপ হতে শুরু করলে নল দিয়ে জোর করে খাওয়ানো হয়েছে। তাঁর আইনজীবী কুয়ানিউ জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে ঝ্যানের অবস্থা খুবই গুরুতর ছিল। ঝ্যান জানিয়েছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের কঠোর প্রতিবাদ জানাতে তিনি শেষ শ্বাস পর্যন্ত লড়াই করে যাবেন। সমাজ এবং পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার অনশন একটি চরম পদ্ধতি।
মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে চিনে আটক বা নিখোঁজ হয়ে পড়া অনেক স্বাধীন সাংবাদিকদের মধ্যে ঝ্যান ছিলেন অন্যতম। ফেব্রুয়ারিতে অনেক সাংবাদিকই সোশ্যাল মিডিয়ায় ইউহানে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণ নিয়ে ভিডিও বানিয়েছিলেন। যার জন্য অনেককেই মাশুল দিতে হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে চিনের বিরুদ্ধে বিশ্বের প্রতিটি দেশ আঙুল তুলেছে। তবে চিন যদিও সেই অভিযোগ মানতে নারাজ। অনেক দেশ করোনাকে চিনের রাসায়নিক অস্ত্র বলে দাবি করেছে। কিন্তু সেই বিষয় এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে কিছু দিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একদল গবেষক উহানে যায় তদন্তের জন্য। উহান থেকে এই অতিমারি ছড়ালেও চিন বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। কিন্তু করোনার নতুন স্ট্রেন ব্রিটেন সহ কয়েকটি দেশের চিন্তা বাড়াচ্ছে। এখনও এই বিষয় সঠিক তথ্য মেলেনি। তবে করোনা ভাইরাস মিউটেট করার দরুণ এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞের একাংশ জানিয়েছেন। সুখবর এটাই, করোনার ভ্যাকসিন এই নতুন প্রজাতির ভাইরাসকে খতম করতে সক্ষম হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের৷