আসলে বিশ্বে সব চেয়ে বেশি গ্রিন হাউজ গ্যাস তৈরি হয় মিট ইন্ডাস্ট্রি থেকে। এই ইন্ডাস্ট্রিই যদি কার্বনে হ্রাস টানে, তা হলে কিন্তু বিশ্বে কার্বনের পরিমাণ কমে। কিন্তু কী ভাবে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেই নিয়ে সম্প্রতি সুইডিশ ইউনির্ভাসিটি অফ অ্যাগ্রিকালচারাল সায়েন্সের সহযোগিতায় কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি সমীক্ষা করা হয়।
গবেষকদের দলটি জানান, বিশ্বের বেশিরভাগ জায়গায় প্যাকেজ মিটের প্রচলন রয়েছ। ফলে প্য়াকেটে যদি মাংসে কার্বনের পরিমাণ উল্লেখ করা যায়, তা হলে বিষয়টি ফলপ্রসূ হবে। তবে, এই লেবেলিংয়ের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করতে হবে। তাঁদের বক্তব্য এতে বোঝা যাবে, মানুষ জেনে-বুঝে কিনছে বা না জেনে বুঝে, এতে পরিবেশে কতটা প্রভাব পড়ছে।
advertisement
Active Information Avoidance বলে একটি টার্ম হয়। যখন মানুষ কোনও কিছু জেনেও এড়িয়ে যেতে চায় বা এড়িয়ে যায়, তখন এই টার্ম ব্যবহার করা হয়। অনেক সময়ে এটি কাউকে দেখে কপি করেও হতে পারে। যেমন- আমার সামনে কেউ কিছু কিনছেন, দেখে ভালো লাগল, জানি সেটা খাওয়া ক্ষতিকর বা তাতে কিছু একটা উপাদান আছে যা বেশি যা ক্ষতি করতে পারে, তাও সেই জিনিসটা কেনা বা ব্যবহার করা এই টার্মের অধীনে পড়ে। এছাড়াও অনেকেই জানেন প্লাস্টিকের বোতল কতটা ক্ষতি করতে পারে পরিবেশের, তাও তা ব্যবহার করা হয়।
এবিষয়ে কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড অ্যান্ড রিসোর্স ইকোনমিকসের জোনাস নর্ডস্ট্রম নামের এক ব্যক্তি বলেন, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে তিনজনের মধ্যে একজন ব্যক্তি জানেনই না তিনি যে খাবারটা খাচ্ছেন তা পরিবেশে কতটা প্রভাব ফেলছে।
এই সমীক্ষাটির জন্য ৮০৩ জনকে ছ'ধরনের খাবারের মধ্যে পছন্দমতো খাবার বেছে নিতে বলা হয়। খাবারগুলির মধ্যে মাংস ও প্ল্যান্ট বেসড মিক্সচার ছিল। কোনওটিতেই ক্লাইমেট লেভেল লেখা ছিল না। তবুও তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁরা খাবারে কার্বনের পরিমাণ জানতে চান কি না। যাতে ৩৩ শতাংশ মানুষ জানান, তাঁরা জানতে চান না।
এবার পরের বার এই ৮০৩ জনকেই ফের খাবার বেছে নিতে বলা হয়। যার প্রত্যেকটিতেই কার্বনের পরিমাণ উল্লেখ করা ছিল। যাঁদের প্রথমবার খাবার বেছে নিতে বলা হয়েছিল তাঁদের মধ্যে ৩২ শতাংশ মানুষ এমন খাবার বেছেছিলেন যার পরিবেশের উপরে প্রভাব রয়েছে। আর ১২ শতাংশ এমন খাবার বেছেছিলেন, যাতে কার্বনের পরিমাণ কমেছে।
তাই গবেষকরা বলছেন, যদি খাবারের প্যাকেটে বিশেষ করে প্যাকেজ মিটে এই ধরনের লেবেলিং করা থাকে, তা হলে মানুষ বুঝে কিনতে পারে এবং পরিবেশে কার্বনের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করতে পারে।