ভেঙে যাচ্ছে কঠিন হিমবাহ। গলে জল হয়ে যাচ্ছে বরফের চাঙড়। চোখের সামনে একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে আন্টার্কটিকার ছবি।
ছোটবেলার ভূগোল বই। কিম্বা আরেকটু বড় হয়ে দেখব এবার জগৎটাকে ভাবনা। যখনই মনে এসেছে আন্টার্কটিকার নাম, তখনই কনকনে ঠান্ডায় কেঁপে ওঠা। হিমশীতল আন্টার্কটিকাই এখন গরমে কাবু। উষ্ণতম দক্ষিণ মেরু।
আন্টার্কটিকায় এখন গরমকাল। গরমকালেও এত গরম কখনও পড়েনি বরফের দেশে। তাই চিন্তায় আবহাওয়াবিদরা। এমনকী এই শীতে সিমলাতেও এর থেকে কম তাপমাত্রা।
advertisement
আন্টার্কটিকায় উষ্ণতম মাস ধরা হয় জানুয়ারিকে। তাও তাপমাত্রার পারদ এতটা চড়ে না। যেভাবে জলবায়ু বদলাচ্ছে, উষ্ণায়ন বাড়ছে, মেরুপ্রদেশের হিমবাহ দ্রুতহারে গলছে, তাতে বিপর্যয়ের আর বেশি দেরি নেই।
আর্জেন্টিনার আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উষ্ণতম আন্টার্কটিকা দেখা গিয়েছিল সেই ১৯৬১ সালে। তারপর ২০১৫-তে ফের উষ্ণতা বাড়ে। ২৪ মার্চ তাপমাত্রার পারদ ছাড়ায় ১৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বিশ্বের ১৯৩টি সদস্য দেশের সংগঠন ‘ওয়ার্লড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (WMO)’-এর মুখপাত্র ক্লেয়ার নুলিস বলছেন, আন্টার্কটিকায় ১৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সত্যিই চিন্তার। জলবায়ু বদলের ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়তে শুরু করে দিয়েছে দক্ষিণ মেরুতে। আগে বছরে যে পরিমাণে বরফ গলত আন্টার্কটিকায়, ১৯৭৯ থেকে ২০১৭, এই ৩৯ বছরে তা ৬ গুণ বেড়েছে। রাষ্ট্রসংঘের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন যে হারে বাড়ছে তাতে আর ৮০ বছরের মধ্যেই মেরুপ্রদেশের এক-তৃতীয়াংশ বরফ পুরোপুরি গলে যাবে। ২০১৫-র প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে বলা হয়, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের পরিমাণ না কমাতে পারলে ২১০০ সালে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা অন্তত ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে। তাতে দুই মেরুর বরফই খুব দ্রুত গলতে শুরু করবে। বেড়ে যাবে সমুদ্রের জল-স্তর। জলরাশি গ্রাস করতে পারে বহু দেশের বহু শহর।