সোমবার লাদাখে কী ধরনের সংঘর্ষ হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ তবে সূত্রের খবর, দুই বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে কোনও আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হয়নি৷ দিল্লি বা বেজিং, কোনও তরফেই এ নিয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আনা হয়নি৷ তবে গোটা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত সরকারি সূত্রের দাবি, ভারতীয় বাহিনী ১৪ নম্বর পেট্রলিং পয়েন্টের কাছে ওই তাঁবু সরানোর কথা বলতে যেতেই চিনা বাহিনী উঁচু জায়গা থেকে ভারতীয়দের উপরে পাথর বৃষ্টি শুরু করে৷ এর পরে লোহার রড এবং লাঠি নিয়ে হামলা চালায় তাঁরা৷ এর পরই দু' পক্ষের মধ্যে প্রবল সংঘর্ষ শুরু হয়৷
advertisement
এই সংঘর্ষের ঘটনায় দু'পক্ষেরই বহু সেনার গুরুতর আঘাত লেগেছে৷ ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্যকে সেনা হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার বিভাগে এনে ভর্তি করাতে হয়৷
গালওয়ান এবং শায়ক নদীর যেখানে মিলেছে, সেখানেই রয়েছে এই ১৪ নম্বর পয়েন্ট৷ এই জায়গাতেই গত সপ্তাহে ভারত এবং চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে ডিভিশন কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল৷ সেই বৈঠকেই ঠিক হয়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে দু' পক্ষই সেনার সংখ্যা কমাবে৷
কীভাবে কর্নেল সন্তোষ বাবুর মৃত্যু হলো, তার তদন্ত এখনও চলছে৷ এক শীর্ষ সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করছিলেন সন্তোষ বাবু৷ তখনই তাঁকে নিশানা করে শত্রু পক্ষ৷
এই সংঘর্ষের পরই মঙ্গলবার সকালে পিএলএ-এর কম্যান্ডাররা উত্তেজনা কমাতে ভারতীয় শিবিরের কাছে আলোচনার প্রস্তাব দেন৷ সেই আলোচনা দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা অফিসার বলেন, 'প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে না চিনের এই হামলা পরিকল্পিত৷ এই ঘটনার একমাত্র ব্যাখ্যা এটাই যে চিনের বাহিনী আশা করেনি যে আমরা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকব৷'
কারাকোরাম পাসের শেষ মিলিটারি পয়েন্ট দৌলত বেগ ওল্ডি-তে থাকা বিমানঘাঁটি পর্যন্ত একটি রাস্তা নিয়ে গিয়েছে ভারত৷ সেই রাস্তার কাজ সম্পন্ন করতে শিয়ক নদীর উপরে একটি সেতু তৈরি করা হয়েছে৷ এরই প্রতিবাদে ১৪ নম্বর পয়েন্টে একাধিক তাঁবু খাটায় চিন৷ দু' পক্ষে কথা শুরু হওয়ার পর তার মধ্যে থেকে দু'টি তাঁবু সরিয়ে নেওয়া হয়৷ এর পাশাপাশি ১৫ নম্বর পয়েন্টেও নিজেদের ক্যাম্প তৈরি করে পিএলএ৷ পাল্টা ভারতও তার কয়েক মিটারের মধ্যে বেশ কিছু তাঁবু তৈরি করে৷ আলোচনার পর দু' পক্ষই ওই এলাকা থেকে নিজেদের বাহিনী সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়৷
গালওয়ান উপত্যকার ১৭ নম্বর পয়েন্টেও দু' দেশের সেনার মধ্যে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল৷ সেখানে বিপুল সংখ্যক সশস্ত্র সেনা এবং যুদ্ধে ব্যবহৃত যানবাহন মজুত করতে শুরু করে দু' পক্ষ৷ এই এলাকা থেকেও বাহিনী এবং সামরিক যানবাহন সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দু' দেশের বাহিনীই৷