স্ক্রাব টাইফাস বা বুশ টাইফাস নামে পরিচিত এই রোগ। টিওরিয়েন্ট সুতসুগামশি নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ। ছোট ছোট চিগার বা এটুলে প্রজাতির পোকার কামড়ের মধ্যে দিয়ে সংক্রমিত হয় এই রোগ। এই পোকাগুলি আকারে ০.২ মিলিমিটার থেকে ০.৪ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়।
স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সাধারণত ৫- ৭ দিনের মাথায় এর উপসর্গ দেখা যায়৷ জ্বর, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, পেশিতে খিচুনি, বমি এগুলি হল স্ক্রাবটাইফেসের লক্ষণ। বিশেষ করে সারা গায়ের চুলকানি হওয়া ফুসকুড়ি বেরনো এর অন্যতম লক্ষণ। যে অংশে ওই পোকা কামড়ায় সেখানে কালো হয়ে স্পট পড়ে যায়। ডেঙ্গি এবং স্ক্রাব টাইফাসের রোগের লক্ষণ অনেকটা একই রকম। তাই অনেক সময় রোগ নির্ণয় করতে সমস্যা হয়। সঠিক চিকিৎসা না করলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। জ্বরের ধরন ও পোকা কামড়ানোর ক্ষতস্থান দেখে রোগীদের চিহ্নিত করা হয়।
advertisement
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত ঝোপ জঙ্গলেই ধরনের পোকাদের অস্থানা। এছাড়া ময়লা জায়গা এবং পুরনো ধুলো ময়লা আসবাবপত্রের মধ্যে বাসা বাঁধছে এই পোকা। আরও বড় চাঞ্চল্যকর তথ্য এই যে, ইদুর হচ্ছে স্ক্রাব টাইফাস এর অন্যতম বাহক। তাই ডাক্তাররা বলছেন ইঁদুর আসতে পারে এমন কোনও খাবার বা বর্জ পদার্থ বাড়ির আসে পাশে না ফেলা।
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভূঁইয়া জানান, এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য বসত বাড়ি গুলি ইঁদুর মুক্ত করতে হবে। যত্র তত্র নোংরা ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা যাবে না। বাচ্চারা খেলা করতে গিয়ে অনেক সময় ঝোপ ঝাড়ে চলে আসে। সে ক্ষেত্রে ফুল হাতা জামা ও পা ঢাকা জুতো পরতে হবে। বিশেষ করে যারা মাঠে কাজ করেন বাড়ি ফিরে গরম জলে ভাল করে স্নান করা ও ভালো করে জামা কাপড় পরিষ্কার করার পরামর্শ দিচ্ছেন জেলা স্বাস্থ্য অধাকারিক।যদি কারোর জ্বর, মাথা ব্যাথা, বমি, শ্বাসকষ্ট হয় তাহলে জেলা সদর হাসপাতাল গুলিতে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিতে বলা হচ্ছে।
জেলার সদর হাসপাতালগুলিতে এই স্ক্রাব টাইফাসের পরীক্ষা চলছে। আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল, চন্দননগর এসডিএইচ হাসপাতাল ও শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে এর পরীক্ষা শুরু হয়েছে। চুঁচুড়া সদর হাসপাতালে ইতিমধ্যেই এই রোগের চিকিৎসা চলছে।
আরও পড়ুন- ফের মূল্যবৃদ্ধি! ১৮ জুলাই থেকে বাড়ছে কোন কোন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম?
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী ১৫ জন আক্রান্ত এই মুহুর্তে। চুঁচুড়ায় ৩ জন, মগড়ায় ৪ জন, পোলবায় ৪ জন, ধনিয়াখালী ১ জন, হরিপাল ১ জন, পান্ডুয়া ১ জন এবং পুরশুড়ায় ১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিন জন ভর্তি আছেন চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে। গত বছর জেলায় ৯৭ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুঁইয়া জানান, অনেকেই জ্বর হলে প্যারাসিটামল খেয়ে জ্বর কমানোর চেষ্টা করেন, তা না করে ডাক্তার দেখাতে হবে। করোনার মধ্যে স্ক্রাব টাইফাস উদ্বেগ বাড়াচ্ছে তাই মানুষকে সাবধান থাকতে হবে।
চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতাল
ফোন - ০১১২৩৯৭৮০৪৬
চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালফোন - ০৩৩২৬৮৩৫৩৯৮
শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতাল
ফোন - ০৩৩২৬৬২৬০৬২
রাহি হালদার