সেদিনের রক্তাক্ষয়ী সংগ্রামে যারা শহিদ হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্য এপার বাংলার এক কৃতি সন্তান রয়েছেন, তাঁর নাম শফিউর রহমান । হুগলি জেলার কোন্নগরের ডিওলডির কাছে জিটি রোডের উপর পৈত্রিক বাড়িতে ১৯১৮ সালের বাইশে জানুয়ারি জন্ম নিয়েছিলেন শফিউর। পড়াশোনা করেছিলেন স্থানীয় কোন্নগর হাইস্কুলে, উচ্চশিক্ষা নেন কলকাতার গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে। দেশ স্বাধীন হবার পর শফিউর রহমানের পরিবার চলে যান পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায়। বাঙালির বাংলা ভাষার সম্মান রক্ষার্থে তাঁর এত বড় আত্মবলিদান বাংলার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে৷ কিন্তু খুবই পরিতাপের বিষয় এত বছর ধরে একুশে ফেব্রুয়ারি তার স্মৃতি রক্ষার্থে কোনরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এপার বাংলায়, তার বাড়িটি কোন্নগরের জীর্ণ ভগ্না অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। আত্মীয়-স্বজন সেখানে বাস করেন ।
advertisement
আরও পড়ুন: দেউলিয়া হয়ে গেছে পাকিস্তান! প্রকাশ্যেই তা স্বীকার করে নিলেন খোদ মন্ত্রী, এবার কী হবে?
তাদেরও দুঃখ এ ব্যাপারে ,স্থানীয় মানুষরা জানিয়েছেন এই মহান বাংলা ভাষা সৈনিকের জন্য কিছুই কী করার নেই আমাদের। তাঁর ভাষা সংগ্রামের কাহিনি এপার বাংলার আগামী প্রজন্ম যাতে জানতে পারে, তার জন্য কিছু উদ্যোগ নেওয়া তো আমাদের কর্তব্য। কোন্নগর পুরসভার পক্ষ থেকে কোন্নগর হাইস্কুলের পাশে একটি ছোট্ট শহিদ বেদী করা রয়েছে৷ প্রতিবছর পুরসভার পক্ষ থেকে একুশের সকালে নমো নমো করে পুষ্পার্ঘ্য দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে আসেন কোন্নগরের কিছু মানুষজন, শুধু এইটুকুই।
এর বেশি কিছু করা হয়নি। এখানকার মানুষদের একটাই দাবি, কোন্নগরের এই সুসন্তানের জন্য, তাঁর স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য, কোনওরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা হলে বাংলার মানুষ জানতে পারবে পশ্চিমবাংলার হুগলির কোন্নগর শহরে জন্ম নেওয়া এক মহান ব্যক্তির কথা৷ যিনি মাতৃভাষা বাংলার সম্মান রক্ষার্থে আত্মবলিদান দিয়েছিলেন৷ একটা স্ট্যাচু অথবা একটা স্মৃতিস্তম্ভ করা হলেও মানুষ জানতে পারবে তার গরিমার কথা। বিশেষ করে আপামর কোন্নগরের মানুষের দাবি এখানে তাঁর যে পৈতৃক ভিটে রয়েছে সেটি যদি সংস্কার করে তাঁর স্মৃতিতে যদিএকটি মিউজিয়াম করা যায়।
রাহী হালদার