গান ছাড়াও রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পও তাঁর খুব প্রিয়৷ পড়তে পড়তে মনে হয়, অত বছর আগে বসে কী করে টের পেলেন আমাদের সকলের মনের কথা? রবীন্দ্রনাথ তাঁর কছে পরশপাথর৷ জীবনের সব মুহূর্তই তাঁর স্পর্শে সোনা হয়ে যায়৷ শিল্পীজীবনের প্রথম দিকে রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা তিনিও করেছেন৷ কিন্তু পরিমিতি বোধ বজায় রেখে, নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে৷ এখন যেন সেই সীমারেখাটা কোথাও লঙ্ঘিত হচ্ছে৷ মনে করেন শ্রাবণী৷ পরীক্ষানিরীক্ষার নামে হারিয়ে যাচ্ছে পরিমিতি৷ তাই শ্রাবণী এখন সনাতনী রীতিতে রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চারই পক্ষপাতী৷ তাঁর কথায়, ‘‘কথা বা সুরের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথই শেষ কথা৷ সে সব পরিবর্তন করার কথা ভাবার স্পর্ধাও কারওর থাকা উচিত নয়৷ পরিবর্তন করা যেতে পারে যন্ত্রানুসঙ্গের ক্ষেত্রে৷’’
advertisement
তবে একটি বিষয়ে কিন্তু শ্রাবণী এখনও সম্পূর্ণ সনাতনী৷ তা হল, শিল্পীর পোশাক৷ তিনি মনে করেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীর আদর্শ পোশাক শাড়ি৷ ছেলেদের ক্ষেত্রে অন্তত পাঞ্জাবী৷ ছাত্রীদের প্রতি তাঁর নির্দেশ, ঘরোয়া অনুষ্ঠানেও শাড়ি পরেই রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশনের৷ ‘‘রবীন্দ্রসঙ্গীতের একটা আভিজাত্য আছে৷ আমার মনে হয়, সনাতনী পোশাক না পরলে কোথায় যেন সেই আভিজাত্যের অমর্যাদা হয়৷ হয়তো কোনও শিল্পী অন্য পোশাক পরে যথেষ্ট ভাল রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইছেন৷ কিন্তু তার পরেও মনে হয়, ইশশ! এত ভাল গানের সঙ্গে পোশাকটা মানানসই হল না৷’’
শুধু পঁচিশে বৈশাখ নয়৷ শ্রাবণীর কাছে বছরের সব দিনই রবি-বার৷ বিশেষ করে, অতিমারির ধূসর পাণ্ডুলিপিতে তাঁর আশ্রয় রবীন্দ্রসৃষ্টিই৷ ‘‘আমারে তুমি করিবে ত্রাণ এ নহে মোর প্রার্থনা, তরিতে পারি শকতি যেন রয়’’-প্রাণের ঠাকুরের এই দু’টি লাইনই হোক সকলের মন্ত্রগুপ্তি৷ ঘরের কোণে রবীন্দ্রসৃষ্টির সঙ্গে একান্ত পঁচিশে বৈশাখ কাটানো শিল্পীর প্রার্থনা এটাই৷
Arpita Roy Chowdhury